Monday 28 September 2015

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষে অনার্স এর আবেদন শুরু ১লা অক্টোবর থেকে

আর মাত্র দুই দিন বাকি...
তারপরেই শুরু হবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এর ভর্তি কার্যক্রম।

ইতিমধ্যে সবাই জেনেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি ২০১৫-২০১৬ প্রকাশিত হয়েছে।

আবেদন শুরু : ০১/১০/২০১৫
আবেদন শেষ: ২৫/১০/২০১৫
আবেদন ফি ২৫০ টাকা।

এবছর কোন ভর্তি পরীক্ষা হবে না।মোট জিপিএ এর
ভিত্তিতে ভর্তি করানো হবে।
ক্লাস শুরু : ১লা ডিসেম্বর

শিক্ষামূলক যাবতীয় পোস্ট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।
শেয়ার করে অন্যদের পড়ার সুযোগ করে দিন।

Saturday 26 September 2015

গ্রেট বৃটেন এবং আয়ারল্যান্ড-এর ইতিহাস (History of Grate Britain & Ireland)

আমরা যখন ফ্রান্স বলি, তখন ফ্রান্সকেই বোঝাই। একই ভাবে যখন জার্মানী বলি তখন জার্মানীকে এবং
সুইডেন বললে সুইডেনকে। কিন্তু আমরা যখন UK তথা ইউনাইটেড কিংডম বলি তখন কাকে বোঝাই?


ইরাক যুদ্ধে বৃটেনের সৈন্য পাঠানো নিয়ে অনেক
চায়ের কাপে ঝড় তোলা হয়েছে; তাহলে প্রশ্ন হলো
বৃটেনই বা কারা? ডলার-পাউন্ডের কনভার্সনের
ওয়েব পেইজে গেলে লেখা দেখি GBP অর্থাৎ গ্রেট
বৃটেন পাউন্ড। তাহলে এই গ্রেট বৃটেনটাই বা কোথা
থেকে এলো? প্রশ্নগুলো আরো জটিল হয়ে যায় যখন
দেখি ইংল্যান্ড বলে একটা দল ফুটবল খেলে অথচ
তাদের কখনো রাজনীতির মঞ্চে দেখা যায় না।
ইংল্যান্ডের ক্রিকেট বোর্ডের নাম শুনলেতো
মাথা আরো ঘোরে - ই.সি.বি এর পূর্নাঙ্গ অর্থ
ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড! ওয়েলসটাই
বা কোথা থেকে আসলো? স্কটল্যান্ড বলেওতো
একটা দেশ আছে, বিশ্বকাপ ক্রিকেটে দেখা
গিয়েছে তাদের কয়েকবার। ঐদেশে যেতে চাইলে
কোন এ্যাম্বেসিতে ভিসার জন্য দাড়াতে হবে?


প্রশ্নগুলো একেবারে চরম জট পাকিয়ে যায় যখন
দেখা যায় ফুটবলে দুইটা আয়ারল্যান্ড - নর্দার্ন
আয়ারল্যান্ড এবং রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ড অথচ
ক্রিকেট, হকি বা রাগবীতে একটা দল -
আয়ারল্যান্ড। যারা ইয়াহু ব্যবহার করেন তারা
দেখতে পান UK এর পেইজটায় গেলে লেখা ওঠে UK
and Ireland। স্বাভাবিক ভাবেই মনে প্রশ্ন জাগে
কেন?


উপরের প্রশ্নগুলোর উত্তর আপাত দৃষ্টিতে হয়তো
বিচ্ছিন্ন মনে হচ্ছে, কিন্তু প্রকৃত পক্ষে এরা একই
সূত্রে গাঁথা। গ্রেট বৃটেন এবং আয়ারল্যান্ড এর গত
এক হাজার বছরের ইতিহাসই পারে এই প্রশ্নগুলোকে
সঠিক ভাবে ব্যাখ্যা করতে।


আদি অবস্থা - গ্রেট বৃটেন এবং আয়ারল্যান্ড
ইউরোপের পশ্চিম পাশ ঘেঁষে দুটো দ্বীপ রয়েছে -
গ্রেট বৃটেন এবং আয়ারল্যান্ড। কয়েক হাজার বছর
আগের ঘটনা, তখনও রাষ্ট্র ধারনার প্রসার ঘটেনি
বরং রাজ্য ব্যবস্থাই ছিল রাজনীতির সর্বোচ্চ
পর্যায়। সে সময় গ্রেট বৃটেন দ্বীপে তিনটি রাজ্য
ছিল - ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড এবং ওয়েলস।


ইংল্যান্ড বিভিন্ন বংশের রাজা ও রানীদ্বারা
শাসিত হয়ে আসছে আজও তবে পদবীর মৌলিক
পরিবর্তন হয়েছে দুইবার (পরে ব্যাখ্যা করা হবে)।
স্কটল্যান্ড কয়েকবার স্বাধীনতা হারালেও ১৭০৭ সন
পর্যন্ত কম বেশি স্কটিশ রাজাদের দ্বারা শাসিত
হয়ে এসেছে। অপর দিকে ওয়েলস ১২৮২ সন পর্যন্ত
বিভিন্ন চড়াই-উৎরাই পার হয়ে নিজস্ব
শাসকদ্বারা শাসিত হয়ে এসেছে তবে ইংল্যান্ড
বা স্কটল্যান্ড এর মত এতটা ঐক্যবদ্ধ তারা কখনই
ছিল না।


অপর দিকে আয়ারল্যান্ড দ্বীপ জুড়ে ছিল একটি
রাজ্য আয়ারল্যান্ড। ১১৯৮ সন পর্যন্ত এই রাজ্যটি একক
রাজার শাসনে ছিল যাদের বলা হতো হাই কিং অব
আয়ারল্যান্ড কিন্তু পরবর্তিতে ছোট ছোট রাজার
অধীনে বিচ্ছিন্ন ভাবে দ্বীপটি শাসিত হয়েছে
১৫৪১ সন পর্যন্ত।


ইংল্যান্ড কতৃক স্কটল্যান্ড এবং ওয়েলস আক্রমন
বরাবরই গ্রেট বৃটেন দ্বীপের সবচেয়ে শক্তিশালী
রাষ্ট্র ছিল ইংল্যান্ড। রাজা প্রথম এডওয়ার্ড-এর
সময় ইংল্যান্ড এতটাই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে যে পুরো
গ্রেট বৃটেনকেই নিজেদের দখলে আনার চেষ্টায়
লিপ্ত হয়। এ সময় ইংল্যান্ড ওয়েলস দখল করে এবং
স্কটল্যান্ডকে প্রায় দখল করে ফেলার মত অবস্থায়
চলে যায় যদিও পরে প্রথম এডওয়ার্ড-এর মৃত্তুর পর আর
সেটা সম্ভব হয়নি।


১২৮২ সনে ওয়েলসের সর্বশেষ শাসক লিওয়েলিন দ্যা
লাস্টকে পরাজীত ও হত্যা করে এডওয়ার্ডের ইংরেজ
বাহিনী ওয়েলস দখল করে। ওয়েলস বিজয়ের পর
এডওয়ার্ড তার ছেলের সম্মানে প্রিন্স অব ওয়েলস
উপাধীটি প্রদান করে। সেই থেকে আজও
যুক্তরাজ্যের রাজা বা রানীর বড় ছেলেকে প্রিন্স
অব ওয়েলস বলা হয়।


অপর দিকে ১২৯৬ সনে ইংল্যান্ড প্রথম স্কটল্যান্ড
আক্রমন করে। যদিও প্রথমদিকে স্কটিশ বীর
উইলিয়াম ওয়ালেস-এর প্রতিরোধে ইংল্যান্ড থমকে
যাচ্ছিল তবে পরবর্তিতে ওয়ালেসকে নিষ্ঠুর ভাবে
হত্যা করে তারা স্কটল্যান্ড দখলের কাছাকাছি
চলে যায়। মেলগিবসন অভিনীত জনপ্রিয় চলচিত্র
ব্রেভ হার্ট ওয়ালেসরই জীবনের উপর নির্মিত।
কিন্তু ওয়ালেসের মৃত্ত্বুর পর রাজা রবার্ট ব্রুস-এর
স্কটিশ বাহিনী আবারও সংঘটিত হয় এবং রাজা
এডওয়ার্ডের মৃত্ত্বুর পর তার ছেলের ব্যর্থতাকে
কাজে লাগিয়ে স্কটিশরা ইংরেজদের পরাজীত
করে স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা অক্ষুন্ন রাখে। ব্রুসের
মৃত্ত্বুর পর ১৩৩২ সন থেকে ১৩৫৭ সন পর্যন্ত আবার
ইংরেজরা স্কটল্যান্ড দখলের চেষ্টা চালায় যদিও
সেবারও তারা পরাজীত হয়।


১৫৪১ - কিংডম অব আয়ারল্যান্ড গঠন:
আয়রল্যান্ডকে কখনও ব্যপকভাবে সামরিক শক্তি
দিয়ে আক্রমন না করলেও ইংল্যান্ড রাজত্বের একটি
চাপ সব সময়ই আয়ারল্যান্ডের উপর ছিল। এ কারনেই
১৫৪১ সনে আইরিশ পার্লামেন্ট (রাজত্ব থাকলেও
দেশগুলোতে পার্লামেন্ট সক্রিয় ছিল) ক্রাউন অব
আয়ারল্যান্ড এ্যাক্ট ১৫৪২ পাশের মধ্য দিয়ে কিংডম
অব আয়ারল্যান্ড প্রতিষ্ঠা করে এবং নির্ধারিত হয়
যে ইংল্যান্ডের রাজা বা রানীই হবেন
আয়ারল্যান্ডের রাজা বা রানী। শাসন ব্যবস্থার
এই ধরনটাকে পার্সোনাল ইউনিয়নও বলা হয়। এ
ক্ষেত্রে শাসক এক হলেও রাজ্য দুটো আলাদা ভাবে
স্বাধীন এবং স্বতন্ত্র ছিল। রাজা অষ্টম হেনরী
ছিল প্রথম কিং অব আয়ারল্যান্ড। একারনেই হেনরী
সহ পরবর্তি রাজাদের দুটো করে পদবী ছিল - কিং
অব ইংল্যান্ড এবং কিং অব আয়ারল্যান্ড। (উদাহরন
- রাজা চতুর্থ এডওয়ার্ড, প্রথম মেরী, রানী প্রথম
এলিজাবেথ ইত্যাদি।)


১৫৪২ - ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলস গঠন:
১৫৩৫ সন থেকে ১৫৪২ সন পর্যন্ত ইংলিশ পার্লামেন্ট
ল'স ইন ওয়েলস এ্যাক্টস ১৫৩৫-১৫৪২ পাশের মধ্যদিয়ে
ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসকে একিভূত করে ইংল্যান্ড
এন্ড ওয়েলস গঠন করে। এই ব্যবস্থায় ওয়েলসের আর
কোন আইন ব্যবস্থা থাকলো না এবং তারা ইংলিশ
আইনের আওতাভুক্ত হয়। তাদের কোন পার্লামেন্ট
বলেও কিছু থাকলো না (১৯৯৯ সন পর্যন্ত। পরে
ব্যাখ্যা রয়েছে)। সেই থেকে অনেক কিছুতেই ওয়েলস
ইংল্যান্ডের অংশ হিসেবে অংশ নেয় এবং
ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড-ও এরই একটা
উদাহরন।


১৭০৭ - কিংডম অব গ্রেট বৃটেন গঠন:
রানী প্রথম এলিজাবেথ-এর মৃত্ত্বুর পর ইংল্যান্ডের
রাজবংশের কোন উত্তরাধিকারী ছিল না কেননা
রানী এলিজাবেথ কুমারী ছিলেন। ফলে ইংল্যান্ড
এবং আয়ারল্যান্ড রাজ্য আক্ষরিক অর্থেই এক
সংকটে পতিত হয়। মজার ব্যাপার হচ্ছে ১৫০৩ সনে
স্কটল্যান্ডের রাজা চতুর্থ জেমস ইংল্যান্ডের
রাজা সপ্তম হেনরীর কন্যা মারগারেটকে বিয়ে
করেছিলেন। কাকতালীয় ভাবে ঠিক একশ বছর পর এই
সম্পর্কের সূত্র ধরে ১৬০৩ সনে স্কটল্যান্ডের রাজা
ষষ্ঠ জেমস ইংল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ডের
রাজত্বভার গ্রহন করেন এবং সমগ্র গ্রেট ব্রিটেনের
রাজা হন। ঐতিহাসিক ভাবে এ ঘটনাকে ইউনিয়ন অব
ক্রাউন বলা হয়। যদিও তখন পর্যন্ত ইংল্যান্ড এবং
স্কটল্যান্ড দুটো আলাদা রাজ্য হিসেবে পরিচালিত
হচ্ছিল। তাৎপর্যপূর্ন বিষয় হলো কিংডম আব
ইংল্যান্ড, কিংডম অব স্কটল্যান্ড এবং কিংডম অব
আয়ারল্যান্ড স্বাধীন তিনটি রাজ্য হওয়া সত্বেও
তাদের শাসক ছিলেন একই ব্যাক্তি।


১৭০৭ সনে আলাদা ভাবে ইংল্যান্ডের এবং
স্কটল্যান্ডের পার্লামেন্টে এ্যাক্ট অব ইউনিয়ন ১৭০৭
পাশ করা হয় যার মাধ্যমে কিংডম অব ইংল্যান্ড
এবং কিংডম অব স্কটল্যান্ডকে বিলুপ্ত করে কিংডম
অব গ্রেট বৃটেন গঠন করা হয়। ১ মে ১৭০৭ রানী এ্যান
প্রথম কুইন অব গ্রেট বৃটেনের দায়িত্ব গ্রহন করেন
এবং সেদিন থেকেই ইতিহাসে কিংডম অব গ্রেট
ব্রিটেন শব্দটির ব্যবহার শুরু হয়। একই সাথে সেদিন
থেকেই কিং অব ইংল্যান্ড এবং কিং অব
স্কটল্যান্ড শব্দদুটিও ইতিহাসের পাতা থেকে
বিলুপ্ত হয়ে যায়।


১৮০০ - ইউনাইটেড কিংডম অব গ্রেট বৃটেন এন্ড
আয়ারল্যান্ড গঠন
তখন পর্যন্ত আয়ারল্যান্ড স্বাধীন রাজ্য হিসেবে
পরিচালিত হলেও শাসিত হতো গ্রেট বৃটেনের
রাজার দ্বারাই। ফলে ধীরেধীরে আরেকটি
ইউনিয়নের সম্ভাবনা বেশ জোরালো হয়ে ওঠে।


১৮০০ সনে রাজা তৃতীয় জর্জ-এর সময় গ্রেট ব্রিটেন
এবং আয়ারল্যান্ডের পার্লামেন্টে এ্যাক্ট অব
ইউনিয়ন ১৮০০ পাশ করা হয় এবং পরের বছরই অর্থাৎ
১৮০১ সনে দুটো রাজ্যকে এক করে একটি অভিন্ন রাজ্য
গঠন করা হয় যার নাম ইউনাইটেড কিংডম অব গ্রেট
বৃটেন এন্ড আয়ারল্যান্ড। ১ জানুয়ারী ১৮০১-এ
ইতিহাসে প্রথমবারের মত ইউনাইটেড কিংডম
শব্দটি ওঠে এবং রাজা তৃতীয় জর্জ এই রাজ্যের প্রথম
রাজা হন।


পরবর্তিতে আরো ১২২ বছর এই রাজ্য পৃথিবীর
বিভিন্ন এলাকা শাসন করে ১৯২২ সনে নিজের ঘরে
ভাঙ্গনের মুখে পতিত হয় এবং জন্ম হয় রিপাবলিক
অব আয়রল্যান্ড নামের একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের।

Friday 25 September 2015

এইচ নাকি হেইচ (Pronunciation of H)

উচ্চারণ কি হবে, এইচ নাকি হেইচ?এ নিয়ে বন্ধুরা প্রায় আলোচনা ও বিতর্কে জরিয়ে পড়ি। তাই ইন্টারনেট এ সার্চ দিলাম,রিজাল্ট ও পেলাম বেশ।অবশেষে অনুসন্ধানকৃত একটি নিবন্ধ আপনাদের সাথে হুবহু তুলে ধরলাম :

এইচ থেকে হেইচ – ভাষার বিবর্তন
লিখেছেন :নিয়াজ মোর্শেদ
আমি ইংরেজী H-কে “হেইচ” উচ্চারণ করি। এতে
আমার ছোট বোনের ব্যাপক আপত্তি। তার ভাষায়
এটা নাকি স্কটল্যান্ডের মানুষরা যারা একটু “নীচু
প্রকৃতি”র, তারা উচ্চারণ করে থাকে। “স্ট্যান্ডার্ড
ইংরেজী” অনুসারে এটা ভুল। তার কোন এক
প্রফেসারকে নাকি একজন “খাঁটি” আইরিশ
ভাষাবিদ “হেইচ” উচ্চারণ করতে মানা করেছে।
আমার ছোট বোনের এই মন্তব্যের জবাবে সাড়ে সাত
ঘণ্টা গবেষণা করে এবং কিছু ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা
দিয়ে নিচের পোস্টটা তৈরি করলাম।
“হেইচ” বিষয়ে আমার মনে হচ্ছে অনেকের ভুল ধারণা
রয়েছে। আমি ভাষাবিদ নই, তাই ভাষার খুঁটিনাটী
আমি ভালো জানি না। তবে ইতিহাস এবং
ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে বিষয়টাকে ব্যাখ্যা
করার চেষ্টা করবো এখানে।
প্রথমেই একটা বিষয় নিয়ে কথা বলার প্রয়োজন মনে
করছি। বাংলাদেশে থাকতেও আমি বেশ কয়েকবার
এই বিষয়টি শুনেছি। স্কটল্যান্ডের মানুষরা নাকি
নীচু বা “গাইয়া” প্রকৃতির। এটা মূলতঃ ভাষার কথা
প্রসঙ্গে অনেকে বলে থাকেন যখন ইংরেজীর
তথাকথিত স্ট্যান্ডার্ড-এর সাথে ডাইল্যাক্টগুলোর
তুলনা হয়। কিন্তু বিষয়টা সম্পূর্ণ ভুল। স্কটল্যান্ডের
মানুষ “স্কটিশ ইংলিশ”-এ কথা বলে। এখানে নীচু
বা গ্রাম্য বা অশিক্ষিত হবার কিছু নেই। শিক্ষিত-
অশিক্ষিত, ধনী-গরীব নির্বিশেষে তারা এই
ভাষাতেই কথা বলে। তাছাড়া একটা ভাষাকে
কিসের উপর ভিত্তি করে স্ট্যার্ন্ডাডাইজড করা
হবে? ইংল্যান্ডের মানুষ যে ভাষায় কথা বলে
সেটাই স্ট্যান্ডার্ড ইংলিশ? আর অন্য সব নীচু
প্রকৃতির? তাহলেতো এ্যামেরিকার মানুষ সব
“গাইয়া”। বর্তমান যুগে সেটা কেউ বলতে সাহস
করবে না কেননা এ্যামেরিকার অর্থনীতি
ইংল্যান্ডের থেকে শক্তিশালী। তাই এখন বলা হবে
ওটা “এ্যামেরিকান ইংলিশ”, ওটাও একটা
স্ট্যান্ডার্ড। তাহলে স্কটিশ ইংলিশকে
স্ট্যান্ডার্ড ইংলিশগুলোর একটি হিসেবে স্বীকৃতি
দিতে সমস্যা কোথায়?
এবার আসা যাক হেইচ প্রসঙ্গে। হেইচ স্কটিশ
ইংলিশ থেকে আসে নি, এসেছে হাইবার্নো
ইংলিশ থেকে। তবে স্কটরাও হেইচ বলে যার কারণ
ইতিহাসে লুকানো। শুরুতেই একটু ব্যাখ্যা করে
নিচ্ছি বিষয়টা। “স্কট” শব্দটা ল্যাটিন “স্কটি”
থেকে এসেছে যার সরল ইংরেজী অর্থ “আইরিশ”।
প্রায় দুই হাজার বছর আগে গ্রেট বৃটেন দ্বীপের উপর
এবং নীচের অংশে দুটো গুরুত্বপূর্ণ “মাইগ্রেশন”
ঘটে। এই সময় আয়ারল্যান্ড দ্বীপ থেকে “গেইল”
নামক একটা গোষ্ঠী নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড দিয়ে
গ্রেট বৃটেন দ্বীপে চলে যায় যেখানে তারা স্থায়ী
ভাবে বসতী গড়ে বসবাস করতে শুরু করে। ঐ সময়
বৃটেনের নীচের অংশে রোমান শাসন ছিল যারা এই
মানুষগুলোকে স্কটি বলতো (তবে ইতিহাসে স্কটি
শব্দটার উল্লেখ পঞ্চম শতকের আগে দেখা যায় নি)।
পরবর্তীতে কালক্রমে স্কটদের দেশ হিসেবে ঐ
এলাকার নাম হয় স্কটল্যান্ড। উল্লেখ্য যে
আয়ারল্যান্ড থেকে যাবার সময় গেইলরা তাদের
সংস্কৃতি এবং ভাষা (“গেইলিক”) নিয়ে গিয়েছিল
যার কারণে স্কটল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ডের
সংস্কৃতির এত সাদৃশ্য। আরেকটা মজার ব্যাপার
হচ্ছে, বৃটেনে রোমান শাসন কালে তারা কখনই
স্কটদের হারাতে পারে নি। ফলে রোমান সম্রাট
হেডরিয়ানের সময় ১২২ সনে বৃটেনের মাঝ দিয়ে
বর্তমান যুগের হিসেবে ১১৭ কিলোমিটার একটা
দেয়াল তুলে স্কটদের আলাদা করে দেয়া হয় যাতে
তারা নীচের দিকে আসতে না পারে। শুধু দেয়াল
দিয়েই তারা ক্ষান্ত হয় নি। এই দেয়ালের ঠিক
পেছনেই ছিল রোমান সেনা ব্যারাক যারা
সার্বক্ষণিক নজর রাখতো সীমানায়। উল্লেখ্য যে এই
দেয়াল কালের সাক্ষি হয়ে আজও টিকে আছে। তবে
ইংল্যান্ডের বর্তমান সীমা আরো সামনে সরে
যাওয়াতে এই দেয়াল আধুনিক ইংল্যান্ডের মধ্যে
পড়েছে, ইংল্যান্ড-স্কটল্যান্ড সীমানায় নয়।
লন্ডনের ব্রিটিশ মিউজিয়ামে এই দেয়ালের একটা
মিনিয়েচার রয়েছে যা গতবছর লন্ডন ভ্রমনের সময়
দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল।
এবার দৃষ্টি ফেরাচ্ছি ইংল্যান্ডের দিকে। রোমান
শাসনের কারণে বৃটেনের নিচের অংশে ব্যাপক
উন্নতি হয়। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রোমানদের তৈরি
করা একটা নগর যার নাম “লন্ডন”। কালের ঘড়ি যখন
এগিয়ে চলছিল, তখন পঞ্চম শতকের দিকে রোমান-
জার্মান থেকে “এংলো-স্যাক্সোন” নামক একটা
গোষ্ঠী গ্রেট বৃটেন দ্বীপের নীচের অংশে এসে
বসবাস করতে শুরু করে। তাদের ভাষার নাম ছিল
“এ্যাংলিশ” যেখান থেকে বর্তমান ইংলিশ এসেছে
এবং তাদের নামানুসারে ঐ এলাকার নাম হয়
ইংল্যান্ড, তবে সেটা আরো অনেক পরে। ষষ্ঠ শতকে
কিং আর্থার তাদের পরাজিত করে
(রিকোম্যান্ডেড মুভি - কিং আর্থার) বৃটনদের পক্ষ
থেকে শাসন প্রতিষ্ঠা করে। আরো পরে ৭৪৭ সনের
দিকে কিং অব মার্সিয়া ওফ্ফা আংশিক ভাবে
কিং অব এ্যাংলেস হয়। তাকেই ইংল্যান্ডের প্রথম
রাজা হিসেবে ধরা হয়। তবে ১০৬৬ সনে ফ্রান্স
থেকে আসা নর্মানরা বর্তমান ইংল্যান্ড এলাকা
দখল করে নেয় এবং এর পর থেকেই মূলতঃ
শক্তিশালী রাজ্য হিসেবে ইতিহাসে ইংল্যান্ডের
পাদচারণা শুরু হয়। উল্লেখ্য যে নর্মান জাতি
এসেছে ফ্রান্স থেকে তবে তাদের আদি জাতি
“ভাইকিং” এসেছে স্ক্যান্ডেনেভিয়া থেকে।
এজন্যে ইংরেজী ভাষায় এই সব এলাকার শব্দের
কোন না কোন ভাবে প্রবেশ রয়েছে। তবে নর্মানরা
দখল করে নেয়ার পর থেকে ইংরেজী শব্দে রোমান
শব্দের প্রভাব কমতে শুরু করে এবং ফ্রেন্স শব্দ
বাড়তে থাকে ব্যাপক ভাবে।
যাইহোক, ইংল্যান্ড যখন গড়ে উঠছিল, তখন
স্কটল্যান্ড বসে ছিল না। ধীরেধীরে ঐক্যবদ্ধ হওয়া
স্কটরা ৮৪৩ সনে প্রতিষ্ঠিত করেছিল “কিংডম অব
স্কটল্যান্ড”। অন্যদিকে ইংল্যান্ডের পাশেই
বৃটেনের একটা কোনায় গড়ে উঠেছিল আরেকটি
রাজ্য। এই রাজ্যের নাম ওয়েলস (ষষ্ঠ শতকে কিং
আর্থারের রাজ্য মূলতঃ বর্তমান ওয়েলস এর
সীমানায় ছিল)। তবে ওয়েলসকে কিংডম বলা হতো
না বরং বলা হতো “প্রিন্সিপালিটি” এবং এর
শাসককে বলা হতো “প্রিন্স”। আর বৃটেনের পাশের
দ্বীপ আয়ারল্যান্ডে তখন অনেকগুলো রাজ্য ছোট
ছোট ভাগে বিভক্ত হয়ে শাসন করছিল। নর্মানরা
ওয়েলস, স্কটল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ড – এই তিন
এলাকাকে দখল করার জন্য মরিয়া হয়ে ছিল যদিও
সেটা সফল করতে আরো দুইশ বছর অপেক্ষা করতে
হয়েছিল। ইংল্যান্ডের রাজা এ্যাডওয়ার্ড (যাকে
লংশ্যাংস বলা হতো) ছিল নিশ্ঠুরতম শক্তিশালী
রাজা। তার তীব্র আকাঙ্ক্ষা ছিল চারটা রাজ্যকে
এক করে একটা রাজ্য বানানোর। সেই উদ্দেশ্যে সে
একের পর এক আক্রমণ করে চলেছিল ওয়েলস,
আয়ারল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ড। প্রথম দুটোতে সফল
হলেও প্রায় দখল করে বসা স্কটল্যান্ডকে শেষ
পর্যন্ত ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছিল এ্যাডওয়ার্ড দুইজন
মহানায়কের কারণে - প্রথমে উইলিয়াম ওয়ালেস
এবং পরে রবার্ট ব্রুস দ্যা গ্রেট (রিকোম্যান্ডেড
মুভি - ব্রেভ হার্ট) বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। তবে তার
থেকেও বড় বাঁধা হয়ে এসেছিল সম্ভবত মৃত্যু। তার
মৃত্যুর পর তার ছেলে দ্বিতীয় এ্যাডওয়ার্ড রবার্ট
ব্রুসের হাতে পরাজিত হয়ে স্কটল্যান্ড ছাড়তে বাধ্য
হয়। এই প্রসঙ্গে স্কটল্যান্ডের সবচেয়ে শক্তিশালী
রাজা রবার্ট ব্রুসের একটা মন্তব্য বেশ মজার। ব্রুস
একবার বলেছিল, “আমি জীবিত দ্বিতীয়
এ্যাডওয়ার্ডকে যতটা পরোয়া করি, তার থেকে
অনেক বেশী পরোয়া করি মৃত প্রথম এ্যাডওয়ার্ডকে”।
যাইহোক, স্কটল্যান্ড দখল করতে না পারলেও অন্য
দুটোতে ভালোই কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিল
এ্যাডওয়ার্ড। সে ১২৭৭ সনের ১১ ডিসেম্বর ওয়েলস এর
প্রিন্সকে হত্যা করে ওয়েলস দখল করে নেয়। সেই
থেকে ওয়েলস ইংল্যান্ডের অংশ হিসেবে গণ্য
হচ্ছে। ওয়লেস দখলের পর এ্যাডওয়ার্ড তার ছেলেকে
“প্রিন্স অব ওয়েলস” ঘোষণা করে এবং সেই থেকে
আজও ইংল্যান্ডের রাজা/রানীর বড় ছেলের
টাইটেল প্রিন্স অব ওয়েলস। সরল ভাষায় বললে বলা
যায় এটা একটা লুণ্ঠিত টাইটেল। যাইহোক, ওয়লেস
দখলের পর প্রথম যে কাজটা ইংরেজরা করে সেটা
তাদের ভাষাকে “পুশ” করা যার ফলে ওয়েলসের
নিজের ভাষা “ওয়েলশ” ধীরেধীরে মৃত্যুবরণ করে।
গতবছর ওয়েলস দিয়ে যাবার সময় লক্ষ্য করি তারা
খুব গর্বের সাথে জানাচ্ছে তারা একটা
বাইলিঙ্গুয়াল দেশ। ২০০৫ সনে ওয়েলস এর রাষ্ট্রিয়
অস্তিত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর তাদের অন্যতম লক্ষ্য
হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের ভাষাকে বাঁচিয়ে তোলা।
উল্লেখ্য যে ওয়েলস-এর ইংলিশ ডাইলেক্টটা
ইংরেজী এবং ওয়লেশ ভাষার মিশ্রণে তৈরি। এতে
“গেয়ো”, “অশিক্ষিত” বা “নীচু” শ্রেনীর কোন ভেদ-
বিভেদ নেই।
এবার দৃষ্টি ঘোরাচ্ছি আয়ারল্যান্ডের দিকে।
এ্যাডওয়ার্ডের শাসনের প্রায় একশ বছর আগের
ঘটনা। ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় হেনরীর পাঁচ
ছেলের মধ্যে সবচেয়ে ছোট ছিল জন। মানুষ তাকে
একটা অদ্ভুত নামে ডাকতো – “জন দ্যা
ল্যাকল্যান্ড”। এই নামের কারণ ছিল বাবার
সবচেয়ে ছোট ছেলে হওয়াতে শাসন করার মত জনের
কোন এলাকা ছিল না। ঐ সময় হেনরী পাশের দ্বীপ
আয়ারল্যান্ড এর একটা ক্ষুদ্র এলাকা দখল করতে
সক্ষম হয় যার নাম “ডাবলিন”। ছেলেকে খুশি করার
জন্যে সেই এলাকায় লর্ডশিপ প্রতিষ্ঠা করে জনকে
প্রেরণ করা হয় আয়ারল্যান্ডের প্রথম লর্ড হিসেবে।
শাসক হিসেবে ইংল্যান্ডের রাজ বংশের এটাই
আয়ারল্যান্ডে প্রথম আগমন। এবার যে গল্পটা বলবো
সেটা আমি বেশ কয়েকবার আইরিশ বন্ধুদের থেকে
শুনেছি। জন যখন প্রথম ডাবলিনে আসে তখন তাকে
অভ্যর্থনা জানাতে আইরিশদের পক্ষ থেকে একটা
প্রতিনিধি দল এসেছিল। তাদের পোশাক দেখে জন
তাচ্ছিল্যের সাথে বলেছিল “এই সব ছোটলোক
কোথা থেকে এসেছে”। ফলে আইরিশরা ক্ষিপ্ত হয়ে
অভ্যর্থনা না দিয়েই চলে যায়। এই গল্পের একটা
তাৎপর্য আছে, সেটা হলো - আয়ারল্যান্ডে ইংরেজ
শাসনের প্রথম মুহূর্তেই তারা “এরিস্টোক্রেট” এবং
তথাকথিত নীচু স্তরে ভাগ করে ফেলেছিল এখানকার
মানুষকে। এরই রেশ ধরে পরবর্তীতে ক্ষমতায় থাকা
ইংরেজ এবং তাদের কাছের আইরিশরা নিজেদের
মনে করতো সম্ভ্রান্ত এবং সাধারণ আইরিশদের
মনে করতো নীচু স্তরের। ফলে আয়ারল্যান্ডে তৈরি
হয় দুটো মেরুর। সাধারণ আইরিশরা গেইলিক
উচ্চারণের সাথে মিলিয়ে ইংলিশ বলতে শুরু করে
কিন্তু যারা ইংরেজদের কাছের মানুষ ছিল, সেইসব
আইরিশরা নিজেদের ভাষাকে ছেড়ে পরিপূর্ণ
ইংরেজ হয়ে উঠার চেষ্টা করে। অবিশ্বাস্য হলেও
সত্য, আজ এক হাজার বছর পরও এই বিষয়টা
আয়ারল্যান্ডের একটা অংশে এখনও বিদ্যমান।
যথাসময়ে সেটা বলবো। যাইহোক, আয়ারল্যান্ডের
প্রথম লর্ড জনের ভাগ্য রাতারাতি বদলে যায় তার
বড় চার ভাইয়ের একের পর এক মৃত্যুতে। ফলে বাবার
পঞ্চম সন্তান হওয়ার পরও সে রাজত্ব পেয়ে যায়
এবং আয়ারল্যান্ড ছেড়ে ইংল্যান্ডে গিয়ে কিং অব
ইংল্যান্ড-এর দায়িত্ব ভার গ্রহণ করে। পরবর্তীতে
এই জন ইতিহাসে দারুণ বিখ্যাত (অথবা কুখ্যাত) হয়ে
উঠে যখন তার সাথে যুদ্ধ বাধে রবিন হুড-এর
(রিকোম্যান্ডেড মুভি - রবিন হুড)। তবে সে গল্প
আমাদের অলোচ্য বিষয়বস্তু নয়। ফলে জনের ইতিহাস
এখানেই শেষ করছি।
পরবর্তী একশ বছর ইংরেজ আগ্রাসন চলে
আয়ারল্যান্ডের ভাষার উপর দিয়ে। যখন প্রথম
এ্যাডওয়ার্ড ক্ষমতায় আসে (যার গল্প জনের আগে
বলছিলাম) ততদিনে আইরিশ ভূমিতে ইংরেজরা
বেশ ভালো ঘাঁটি বেঁধে ফেলেছে। এ্যাডওয়ার্ড
সেটাকে আরো উস্কে দেয়। ওয়েলস-এর টুরিজমের
ওয়েব সাইটে পড়েছিলাম, এই সময়টায় ওয়েলস এবং
আয়ারল্যান্ড থেকে বিলুপ্ত হতে শুরু করে তাদের
নিজেদের ভাষা। আর গড়ে উঠতে শুরু করে
হাইবার্নো ইংলিশ। ইংরেজীর এই ডাইল্যাক্টটার
বিশেষত্ব হচ্ছে, এটা গেইলিক উচ্চারণে ইংরেজী
বলে। এই ডাইল্যাক্টের “হাইপারকারেশন”-এর
প্রভাবে এ্যাংলো ইরেজীর বেশ কিছু “নিশ্চুপ
অক্ষর” উচ্চারিত হতে শুরু করে। এর মধ্যে অন্যতম
“আর” এবং “হেইচ”। ইংরেজরা যেখানে R কে
উচ্চারণই করে না (নন-রোটিক এ্যাকসেন্ট) সেখানে
আইরিশ, স্কট এবং ওয়েলশরা (কেলটিক জাতিগুলো)
এটাকে গভীর ভাবে উচ্চারণ করে (রটিক
এ্যাকসেন্ট)। যেমন, ইংল্যান্ডে বলে, “ইউ আ‘ মাই
বা‘দা‘”। আয়ারল্যান্ডে বলে, “ইউ আ‘ঢ় মাই
ব্রাদা‘ঢ়”। এই প্রমিনেন্ট R এর উচ্চারণ এখন ব্রিটিশ
এবং এ্যামেরিকান ইংরেজীর অন্যতম প্রভেদ
সৃষ্টিকারি মানদণ্ড (কীভাবে সেটা হলো, সেটা
আরো পরে ব্যাখ্যা করবো)। এরই মত H-এর উচ্চারণও
সাধারণ আইরিশরা করতে শুরু করে “হেইচ” কেননা
গেইলিকে উচ্চারণটা এমন।
কেটে যেতে থাকে সময়। ষোড়ষ শতকের ঘটনা।
“পার্সোনাল ইউনিয়ান”-এর মাধ্যমে আয়ারল্যান্ড
তখন পুরোপুরি ইংরেজ রাজার দখলে। ১৫৮৩ সনে
স্যার গিলবার্ট আয়ারল্যান্ড থেকে যাত্রা শুরু করে
আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে নিউফাওন্ডল্যান্ডে গিয়ে
পৌঁছান এবং সেই এলাকাকে ইংল্যান্ডের কলোনি
হিসেবে ঘোষণা করেন। উল্লেখ্য যে নর্থ
আমেরিকায় এটাই প্রথম ইংরেজ কলোনি। এরপর
স্রোতের মত আইরিশরা মাইগ্রেন্ট হতে শুরু করে
নর্থ আমেরিকায়, সাথে নিয়ে যেতে থাকে তাদের
ভাষা। ১৮৪৫ সনে আয়ারল্যান্ডে আলুতে এক বিশেষ
ধরণের ফাঙ্গাস দেখা দেয় যার কারণে আলুর
উৎপাদনে ব্যাপক ধস নামে। যেহেতু আয়ারল্যান্ডে
আলু প্রধান খাদ্য, ফলে এর রেশ ধরে দেখা দেয়
প্রচণ্ড দুর্ভিক্ষ – যা ইতিহাসে “গ্রেট পটাটো
ফেমিন” নামে পরিচিত। এই সময় আয়ারল্যান্ডের
অর্ধেকেরও বেশী মানুষ (কিছুকিছু এলাকার ৮৫
শতাংশ মানুষ) এ্যামেরিকা, ক্যানাডা এবং
অস্ট্রেলিয়াতে চলে যায়। এই মাইগ্রেশন
এ্যামেরিকার ইতিহাসে খুবই গুরুত্বপূর্ণ কেননা এই
মানুষগুলোই পরবর্তীতে এ্যামেরিকাকে নূতন ভাবে
গড়ে তুলেছিল (রিকোম্যান্ডেড মুভি - গ্যাঙ্স অব
নিউ ইয়র্ক)। এই মাইগ্রেশনের ফলে এ্যামেরিকায়
“রটিক এ্যাকসেন্ট” আরো ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে
পড়ে।
এবার বিংশ শতকের আয়ারল্যান্ডের দিকে
তাকাচ্ছি। এখানে তখন টানটান উত্তেজনা দুটো
শ্রেণীর মধ্যে। একটা দল ক্যাথলিক যারা আইরিশ
জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী। আরেকদল
প্রোটেস্টট্যান্ট যারা নিজেদের এ্যাংলো-আইরিশ
ভাবতে পছন্দ করতো। প্রোটেস্টট্যান্টদের মূল ঘাঁটি
ছিল নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড যেখানে ক্যাথলিকরা
ছিল নির্যাতিত, বঞ্চিত এবং গরীব
(রিক্যোমেন্ডেড মুভি - ফিফটি ডেড মেন
ওয়াকিং)। অন্যদিকে প্রোটেস্টট্যান্টরা ছিল
ক্ষমতাধর এবং তথাকথিত উঁচু বর্গের। তারা গেইলিক
ভাষায় কথা প্রায় বলতোই না। নর্দার্ন
আয়ারল্যান্ড সহ আয়ারল্যান্ড-এর প্রায় সব স্থানেই
ক্যাথলিক স্কুলগুলোতে বাচ্চাদের শেখানো হতো
“হেইচ” কিন্তু প্রোটেস্টট্যান্ট স্কুলগুলোতে
শেখানো হতো “এইচ”। প্রোটেস্টট্যান্টরা প্রচার
করতো “হেইচ” বলে নীচু প্রকৃতির স্বল্প শিক্ষিত
মানুষরা আর “এইচ” বলে এরিস্টোক্রেটরা।
পরবর্তীতে ১৯২২ সনে আয়ারল্যান্ড স্বাধীন হলে
৩২টা কাউন্টির মধ্যে ৬টা নিয়ে তারা নর্দার্ন
আয়ারল্যান্ড হিসেবে পুনরায় ইংল্যান্ডের সাথে
যোগ দেয় এবং বাকি ২৬টা কাউন্টি প্রথমে আইরিশ
ফ্রি স্টেট এবং পরে রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ড
হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
বর্তমানে রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ড-এ স্কুল,
কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় – সব স্থানে “হেইচ” ব্যবহার
করা হয়। এখানে কেউ “এইচ” উচ্চারণ করে না বা
আমরা যদি করি তাহলে তারা ঠিক মত বোঝেও না।
দুটো গল্প বলছি এই প্রসঙ্গে। আমি প্রথম যখন দেশে
টাকা পাঠানোর জন্যে পোস্ট অফিসে যাই, তখন
তারা আমার নামের বানান জিজ্ঞেস করেছিল।
আমি বলেছিলাম, “সি এইচ ও ডব্লিউ…”। যে লোকটা
কাউন্টারে ছিল, সে প্রথমবার বোঝে নি আমি কী
বললাম। ফলে আমি আবার রিপিট করি। কিন্তু
লোকটা এবারও বোঝে না। আমি তৃতীয়বার বলার পর
সে হেসে বললো, “ওহ! হেইচ?”। আরেকটা গল্প
আমাদের ট্রিনিটিরই আরেক বাংলাদেশী ছাত্র
ধ্রুবকে নিয়ে। সে গিয়েছে প্রিন্টার কিনতে।
দোকানে গিয়ে বলেছে, “এইচ পি” দিতে।
সেলসম্যান বোঝে না। বেশ কয়েকবার বলার পর ধ্রুব
যখন “হেইচ পি” বলে তখন সে বুঝেছে। আমার
কাজিনের বন্ধু শিবলী ভাইয়া লন্ডনে থাকেন।
সেখাতে তার একটা অভিজ্ঞতা আছে এ বিষয়ে।
HSBC ব্যাঙ্কে গিয়ে শোনে তারা “হেইচ এস বি
সি” বলে! গতবছর ইংল্যান্ড গিয়ে আমি নিজেও
দেখেছিলাম ওখানেও এখন অনেকেই হেইচ বলে।
আমাদের রিসার্চ রুমে আমরা সব সময় “হেইচ টি এম
এল”, “হেইচ টি টি পি” ইত্যাদি বলি। মাঝে মাঝে
হেইচটা অল্প উচ্চারণ করা হয় যখন সংক্ষেপণের
মাঝে থাকে - যেমন পি.হেইচ.ডি বলা হলে অনেক
সময় “পি.এইচ.ডি”-ও শোনায়। ২০০৭ সন থেকে আমার
মধ্যে এই বিষয়টা এমন ভাবে ছড়িয়েছে যে আমি
চাইলেও এখন আর “এইচ” উচ্চারণ করতে পারি না
কথার মধ্যে। কাল হঠাৎ করে মনে হলো “এইচ পি”
শব্দটা যেন আমি জীবনও শুনি নি, এতটাই অচেনা
লাগছিল। আসলে এটা গ্রহণ করা বা বর্জন করার
বিষয় নয়। এটা পরিবেশে থাকলে আপনাআপনি ঢুকে
যাবে। হয়তো আয়ারল্যান্ড ছেড়ে অন্য দেশে গেলো
আবার আমি “এইচ”-কে স্বাভাবিক ভাবে নিতে
পারবো।
এবার স্ট্যান্ডার্ড-এর বিষয়ে আবার একটু ফিরে
আসি। আমাদের মনে রাখতে হবে ভাষা মানুষের মুখ
থেকে ভাষাবিদের টেবিলে যায়, ভাষাবিদের
টেবিল থেকে মানুষের মুখে আসে না। আজ আমরা
যে বাংলা ভাষায় কথা বলছি এটা কিন্তু নদীয়ার
ডাইলেক্ট। রবি ঠাকুর প্রথম দিকে এর ব্যাপক
বিরোধিতা করেছিলেন। কিন্তু আজ এটাই
স্ট্যান্ডার্ড কারণ সবচেয়ে বেশী মানুষ এই
ডাইলেক্টে কথা বলে। আজ যদি নোয়াখালির
ভাষায় সবাই কথা বলতো তাহলে সেটাই
স্ট্যান্ডার্ড হতো! একেকটা ডাইলেক্ট ধীরেধীরে
স্ট্যান্ডার্ড হয়। আজ এ্যামেরিকান ডাইলেক্টকেও
স্ট্যান্ডার্ড বলা হয়। অথচ প্রায় চার শ বছর আগে
তারাই ছিল “নীচু” এবং
“অশিক্ষিত” (রিকোম্যান্ডেড মুভি - দ্যা
পেট্রিয়ট)। উইকিপিডিয়াতে “হেইচ” আর্টিকেলটা
আমি গত দুই বছর ফলো করছি। ওখানে না না বিতর্ক
হচ্ছে। আর এই বিতর্কের মাধ্যমে যে জিনিসটা
বুঝতে পেরেছি সেটা হলো “হেইচ” এখন ছড়িয়ে
পড়েছে সারা পৃথিবীতে, আর সেজন্যেই এত বিতর্ক।
সেই আর্টিকেলে স্ট্যান্ডার্ড ইংরেজির পক্ষে যে
রেফারেন্সটা দেয়া হয়েছে সেটা অক্সফোর্ড
ডিকশনারি থেকে নেয়া। ফলে সেখানে ব্যাখাটা
কেমন হবে সহজেই বোধগম্য। এই লিঙ্কটা আরেকটা
ডিকশনারি থেকে নেয়া। এখানে “হেইচ” এর
ব্যাখ্যাটা দেখলে অনেক কিছু পরিষ্কার হবে
আমাদের কাছে।
আমার ছোট বোনের স্যার যে “খাঁটি” আইরিশ-এর
সাথে কথা বলেছিলেন, সেই আইরিশ প্রফেসার কি
ক্যাথলিক ছিলেন নাকি প্রোটেস্টট্যান্ট? এটা
একটা প্রশ্ন বটে। আমি ৯৯ শতাংশ নিশ্চিত তিনি
প্রোটেস্টট্যান্ট ছিলেন। আর সেজন্যই তার
ব্যাখ্যাটা অমন ছিল।
সব শেষে একটাই কথা বলবো, আজ যদি কেলটিক
জাতিগুলো অর্থাৎ আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড বা
ওয়েলস -এর কথা বলি, তাহলে “হেইচ”-ই এখানে
স্ট্যান্ডার্ড। “এইচ” এখানে অব্যবহৃত ডাইলেক্ট!

Saturday 12 September 2015

"স্যার সাইফুল আজম" বাইশ জন “Living Eagles”এর একজন ।

সাইফুল আজম ১৯৪১ সালে পাবনা জেলার
খগড়বাড়িয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। উচ্চ মাধ্যমিক
স্তরের পর ১৯৫৬ সালে তিনি পশ্চিম পাকিস্তান
যান। ১৯৬০ সালে তিনি জিডি পাইলট ব্রাঞ্চের
একজন পাইলট হন।
জুন ৬ , ১৯৬৭। আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ চলছে। তৎকালীন
পাকিস্তান এয়ারফোর্স থেকে ডেপুটেশনে আসা
গ্রুপ ক্যাপ্টেন সাইফুল আজম পশ্চিম ইরাকের এক
বিমান ঘাটিতে অবস্থান করছে। অনেকটা
ভোজবাজির মতোই আকাশে চারটা ইজ্রায়েলি
বিমানের ( যাদের কে এস্কোর্ট করছিলো দুইটা
ইস্রায়েলি মিরেজ ফাইটার ) উদয় হয়। আকস্মিক
আক্রমণে ইরাকি এয়ারফোর্স বিপর্জস্ত ।
ইসারায়েলি ক্যাপ্টেন ড্রোর একের পর এক ইরাকি
বিমানের ভবলীলা সাংগ করে চলেছে। তার সাথে
সঙ্গী হিসাবে আছে আরেক ইজ্রায়েলি ক্যাপ্টেন
গোলান। এই অবস্থায় আকাশে উড়াল দেয় সাইফুল
আজম। উড়াল দেবার কিছুক্ষণের মাঝেই তার
উইংম্যান কেও ফেলে দেয় ইজ্রায়েলি ক্যাপ্টেন
ড্রোর। কিন্তু সাইফুল আজম অন্য ধাতুতে গড়া। একে
একে গোলান, ড্রোর সবার প্লেন ফেলে দেয় সে।
মোটামুটি একা লড়াই করে ইজ্রায়েলি বিমান
গুলোকে ইরাকের আকাশ ছাড়তে বাধ্য করে সে।
ক্যাপ্টেন ড্রোর এবং গোলান কে পরে যুদ্ধবন্দী
হিসাবে আটক রাখা হয়।
এখন পর্যন্ত আধুনিক যুদ্ধের ইতিহাসে ইসরায়েলের
সর্বোচ্চ সংখ্যক বিমান ঘায়েল করার রেকর্ড
ক্যাপ্টেন সাইফুল আজমের।
এছাড়া প্রথম বিশবযুদ্ধ থেকে শুরু করে এপর্যন্ত
সর্বোচ্চ সংখ্যক শত্রুপক্ষের বিমান ঘায়েল করার
রেকর্ড এর তালিকায় ও তিনি উপরের দিকে আছেন।
আরব-ইস্রায়েল যুদ্ধে অসাধারণ অবদান রাখার
স্বীকৃতি স্বরূপ জর্দান-ইরাক-পাকিস্তান তাকে
বীরত্ব সূচক পদকে ভূষিত করে। তিনটি দেশের
সম্মান সূচক সামরিক পদক অর্জনের ঘটনা সামরিক
ইতিহাসে বিরল। একই সাথে তিনটি দেশের হয়ে
যুদ্ধ করা এবং একই ব্যাক্তির দ্বারা একের অধিক
শ্ত্রু রাষ্ট্রের (ভারত এবং ইসরায়েল) বিমান
ভূপাতিত করার বিরল রেকর্ডের অধিকারীও এই একই
ব্যাক্তি।
১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় তাকে সাময়িক
ভাবে সারাগোধাতে অবস্থিত ১৭
স্কোয়াড্রন এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ফ্লাইট
লেফটেন্যান্ট সাইফুল আযম এ সময় এফ-৮৬ স্যাবর
জেট বিমান এর পাইলট হিসেবে প্রধানত পদাতিক
সহায়ক মিশন পরিচালনা করতেন। ১৯৬৫ সালের ১৯ এ সেপ্টেম্বর বিখ্যাত চাবিন্দা ট্যাংক যুদ্ধে অংশ
নেন তিনি এবং বিমান থেকে রকেট ও গোলা বর্ষন
করে একাধিক ভারতিয় ট্যাংককে ধ্বংস ও অকার্যকর
করেন। এসময় চারটি ভারতিয় ”Gnat”জঙ্গি বিমান
তাদের উপর আক্রমন করে। সাধারন ভাবে বিমান
থেকে ভুমিতে যুদ্ধের উপযোগি অস্ত্র সজ্জিত
থাকায় এসময় পাকিস্তানি বিমানগুলির পালিয়ে
যাওয়াই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু ফ্লাইট
লেফটেনান্ট সাইফুল আযম রুখে দাড়ান এবং বিমান
যুদ্ধ বা ডগ ফাইটে একটি ভারতিয় ”Gnat” জঙ্গি
বিমান ভুপাতিত করেন। এই কৃতিত্বের জন্য তাকে
পাকিস্তানে ”সিতারা-ইজুরায়ত” (বাংলাদেশের
বীরবিক্রম এর সমতুল্য, পাকিস্তানের তৃতীয়
সামরিক বীরত্বের খেতাব) পদকে ভুষিত করা হয়।
১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ
চলাকালীন সময়ে তিনি চারটি F-86 Sabre এর
ফরমেশনে অংশ নিয়ে ভারতের ভূমীতে আক্রমণের
উদ্দেশ্যে উড্ডয়ন করেন। হঠাৎ দুইটি ভারতীয়
Folland Gnat (Folland Gnat, F-86 এর চেয়ে Superior) তাদের পথ রোধ করে। ঘটনার জেরে সৃষ্ট ডগফাইটে সাইফুল আজম একটি Folland Gnat গোলাবর্ষণ করে ভূপাতিত করেন (পাইলট,ফ্লাইং
অফিসার ভি মায়াদেব নিরাপদে Ejectকরে
বেরিয়ে আসলে তাকে যুদ্ধবন্দি করা হয়). অন্য
Folland Gnat টি রনেভঙ্গ দিয়েছে বুঝতে পারার
পর সেটিকে পালিয়ে যেতে দেওয়া হয়।
১৯৬৬ সালের নভেম্বর মাসে তৎকালীন ফ্লাইট
লেফটেন্যান্ট সাইফুল আজম এবং অপর আরেক জন
পাকিস্তানী বিমান বাহিনীর অফিসার ফ্লাইট
লেফটেন্যান্ট সারওয়ার সাদকে রাজকীয় জর্ডান
বিমান বাহিনীতে প্রেষণে প্রেরণ করা হয়।
সেখানে তারা রাজকীয় জর্ডান বিমান বাহিনীর
Hawker Hunter অপারেট করতেন। তারা সেখানে
১৯৬৭ সালের আরব-ইসরাইল যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন।
৫জুন ১৯৬৭ সালে আল মাফরাক থেকে উড্ডয়নের পর
ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট সাইফুল আজম একটি Mystere
IV কে তার দ্বিতীয়শিকারে পরিণত করেন। এই
ঘটনার মাত্র দুই দিন পর, ৭ জুন ১৯৬৭ ইরাকী বিমান
বাহিনীতে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে পশ্চিম ইরাকী
এয়ার ফিল্ড H-3 এ তিনি অবস্থান করাকালে,
ইসরাইলী জঙ্গি জেট এয়ার ফিল্ড H-3 আক্রমণ
করে। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট
সাইফুল আজম ইরাকী Hawker Hunter বিমান নিয়ে
উড্ডয়ন করে একটি Mirage III এবং একটি Vautour
Bomber ভূপাতিত করেন (Vautour Bomber টির
ছোট্ট কিছু ভগ্নাবশেষ সাইফুল আজমের Hunter এ
গেঁথে থাকতে দেখা যায়, যা থেকে তার
সহকর্মীরা বুঝতে পারেন তিনি বিমানটিকে
আকাশেই গুড়িয়ে দিয়েছেন)। উল্লেখ্য Mirage III
সাইফুল আজমের Hawker Hunter এর তুলনায় বহুগুণে
Superior। এছাড়া Mystere IV ও এয়ার টু এয়ার
কমব্যাটের ক্ষেত্রে Hawker Hunter এর চেয়ে
Superior। Mirage III, Mystere IV সাইফুল আজমের
Skill, Tactics ও সাহসের কাছে পরাস্ত হয়েছে।
কিন্তু সাইফুল আযম ও তার স্কোয়াড্রন সাফল্য লাভ
করলেও অন্যান্য জর্দানি বিমানগুলি ব্যার্থ হয়
এবং ইসরাইলি বোমা বর্ষনে বেশিরভাগ জর্দানি
বিমান ভুমিতেই ধ্বংস হয়ে যায় ও রানওয়েগুলি
ক্ষতি গ্রস্ত হয়। সাইফুল আযম তার সাফল্যের জন্য
জর্দানিদের প্রসংশা ও শ্রদ্ধা পান। বাদশাহ
হুসাইন তার নিজের গাড়িতে করে সাইফুল আযমকে
তার মেস এরৎ পেীছিয়ে দেন। জর্দান থেকে আর
উড্ড্য়ন সম্ভব না হওয়ায় জর্দানি বিমান বাহিনীর
পাইলটরা প্রতিবেশি ইরাকি বিমান বাহিনীতে
সহায়তার সিদ্ধান্ত নেয়।
সাইফুল আযম আবারও পাকিস্তানে ফিরে যাওয়ার
পরিবর্তে ইরাকি বিমান বাহিনীর হয়ে ইসরাইলের
বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন। এবারও দক্ষতার
পরিচয় দিয়ে ইরাকি বিমান বাহিনীর হকার
হান্টার বিমান নিয়ে তিনি তৎকালিন সর্বাধুনিক
ফ্রান্সের "মিরেজ-৩সি" বিমান
ভুপাতিত করেন। তিনি একটি ”ভেটর”বোমারু
বিমানও ভুপাতিত করেন। তার অসাধারণ কৌশল ও
সাহসিকতায় মুগ্ধ হয়ে জর্দান সরকার ”ওয়াসমা ই
ইস্তেকলাল” বা স্বাধিনতা পদক এবং ইরাক কর্তক
”নওয়াত-ই সুজ্জাত” পদকে ভুষিত করে। জর্ডান ও
ইরাক উভয় দেশই তাকে বীর পদক প্রদান করে।
১৯৭১ সালে বাঙ্গালী হওয়ায় তাকে পাকিস্তান
বিমান বাহিনী Grounded করে। পূর্ব পাকিস্তান
স্বাধীন হয়ে বাংলাদেশের জন্ম হলে তিনি নতুন
গঠিত বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর Director of
Flight Safety এবং পরবর্তীতে Director of
Operation হিসেবে নিয়োগ পান।
১৯৭৭ সালে তিনি উইং কমান্ডার পদে পদোন্নতি
পান এবং ঢাকা বিমান বাহিনী ঘাটির বেস
কমান্ডার হন। ১৯৮০ সালে সাইফুল আজম
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী থেকে গ্রুপ ক্যাপ্টেন
পদে অবসর গ্রহণ করেন। অবসর গ্রহণ করার পর তিনি
দুই টার্মে বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের
পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি
Film Development Corporation এর ব্যবস্থাপনা
পরিচালকও ছিলেন।
তিনি ১৯৯১-৯৬ সালে পাবনা-৩ আসন থেকে
(চাটমোহর উপজেলা, ফরিদপুর
উপজেলা ও ভাঙ্গুরা উপজেলা) বাংলাদেশ
জাতীয়তাবাদী দলের (BNP) পক্ষে পঞ্চম জাতীয়
সংসদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি
বর্তমানে নাতাশা ট্রেডিং এজেন্সি, লিঃ (এয়ার
ক্রাফট ও অন্যান্য যন্ত্রপাতির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান)
এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি একটি ট্রাভেল
এজেন্সিও পরিচালনা করেন। স্ত্রী নাতাশা, তিন
সন্তানের জনক তিনি।
২০০১ সালে তাকে যুক্তরাষ্ট্র বিমান বাহিনী
বিশেষ সম্মাননা প্রদান করে। তিনি বাইশ জন
“Living Eagles”এর একজন ।

Friday 11 September 2015

চলুন দেশটাকে পরিস্কার করি (সিলেট অভিযান)

# স্থান ও তারিখঃসিলেট ১২সেপ্টেম্বের
# নিবন্ধন : https://docs.google.com/forms/d/1hwq1Nw-rpJl1UJalCqdx3uJFfhfZIflTK1qRdjEX0j4/viewform
***(অংশগ্রহণকারী সকলকে টি-শার্ট সহ পরিচ্ছন্নতা সংশ্লিষ্ট
অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি বিতরণ করা হবে)
আমরা কে না চাই আমার ঘরটা পরিষ্কার থাক, আমার বাসাটা
পরিষ্কার থাক, আমার এলাকাটা পরিষ্কার থাক, আমার দেশটা
পরিষ্কার থাক? আমরা সবাই চাই একটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন
পরিবেশে বাঁচতে । কিন্তু শহরায়ন এবং নগরায়নের যুগে এসে
আমরা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা থেকে দূরে সরে যাচ্ছি । ক্ষতিটা
আমাদেরই । আমরা নিজেদের দেশকে সুজলা সুফলা শস্যশামলা
বলে গর্ব করলেও, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দিক দিয়ে আমাদের
অবস্থান অনেক পিছিয়ে ।
শুধু প্রশাসনের দোষ দিয়ে আর কতদিন, আসুন না আমরাই উদ্যোগ
নেই, আসুন না আমরাই একটি সামজিক আন্দোলন গড়ে তুলি-
দেশটাকে পরিষ্কার করার । মনে রাখবেন একটি পরিচ্ছন্ন দেশ
একটি পরিচ্ছন্ন জাতিস্বত্বার পরিচায়ক ।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ‘ পরিবর্তন চাই ’ নামক একটি সামাজিক
স্বেচ্ছাসেবামূলক সংগঠন দেশটাকে পরিষ্কার করার আন্দোলনে
নেমেছে । এই সংগঠনের লক্ষ্য এক এক করে পুরো বাংলাদেশে
পরিচ্ছন্নতার এই আন্দোলন ছড়িয়ে দেয়া । এরই ধারাবাহিকতায়
‘পরিবর্তন চাই’ আসছে আপনাদের-আমাদের সিলেটে। আপনি
চাইলেই এই প্রচেষ্টার গর্বিত অংশ হতে পারেন ।
দেশটাকে পরিষ্কার করি - সিলেট অভিযানের নিবন্ধন ফর্মের
লিংক : https://docs.google.com/forms/d/1hwq1Nw-rpJl1UJalCqdx3uJFfhfZIflTK1qRdjEX0j4/viewform

"পরিবর্তন চাই"- এর উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমগুলো সম্পর্কে
জানতে-
http://goo.gl/NdZpBp
নিবন্ধন সীমিত, তাই দ্রুত নিবন্ধন করে আপনার অবস্থান
নিশ্চিত করুন । আশা করি নিজ দায়িত্ববোধ থেকেই সবাই এই
অভিযানে অংশ নেবেন। সিলেটের সকল শ্রেণীর মানুষের
স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ কামনা করছি ।

সাবধান হোন মটর সাইকেল দুর্ঘটনার হাত থেকে

একটি দুর্ঘটনা হতে পারে সারাজীবনের কান্না
বন্ধুরা মিলে বাইকে চড়ে বিকেলে
বেড়িয়েছিল। রাস্তা ফাঁকা পেয়ে হঠাৎ
তিনজনের মাথায় রেসের ভুত চাপে। প্রিয়
বন্ধুকে পিছনে ফেলতেই আচমকা রডবাহী
একটি গাড়ি তার সামনে। ব্রেক কষে ছিল
ঠিকই কিন্তু ততক্ষণে রড গুলো তার পেটে
ঢুকে গেছে।
বাংলাদেশের পাড়া মহল্লাতেও প্রায়
এধরনের দৃশ্য দেখা যায়। যারা মটরসাইকেল
নিয়ে স্কুল কলেজের অলিতে গলিতে,
সিনেমার হিরো সেজে রকেট গতিতে ছুটে
চলে। সে সব ছেলেদের যদি একটু বোধ
জাগ্রত হয় তাহলেই এই পোস্টের সার্থকতা।
(পাকিস্তানের এক বন্ধু তার শহরে ঘটে
যাওয়া খবরটা শেয়ার করেছেন)

Tuesday 8 September 2015

একনজরে দেখে নিন নতুন কি কি থাকছে এন্ড্রয়েড মার্শম্যালোতে

মিষ্টির দিকে গুগলের ঝোঁক একটু বেশিই দেখা যায়। আর সেই ধারাবাহিকতায় অ্যান্ড্রয়েডের পরবর্তী সংস্করণটির নামও গুগল একটি মিষ্টিজাতীয় খাবারের নামে দিয়েছে
। সিএনএনের খবরে জানা গেল, অ্যান্ড্রয়েডের পরবর্তী সংস্করণটির নাম দেওয়া হচ্ছে ‘মার্শম্যালো’।

গুগলের জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম অ্যান্ড্রয়েডের নতুন সংস্করণ ‘মার্শম্যালো’র ডেভেলপার সংস্করণ উন্মোচিত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছিল, অ্যান্ড্রয়েড ৫.০ [ললিপপ] সংস্করণের পর ৫.২ সংস্করণ অবমুক্ত হতে পারে। কিন্তু অ্যান্ড্রয়েড প্রিয়দের রীতিমতো অবাক করে নতুন সংস্করণ ৬.০ অবমুক্ত করতে যাচ্ছে গুগল। নতুন এই সংস্করণে যুক্ত হয়েছে আগের জনপ্রিয় সব ফিচারের পাশাপাশি নতুন আকর্ষণীয় ফিচার। আর এই সংস্করণটির নতুন ১০ টি আকর্ষনীয় ফিচার নিয়েই লিখছি আমার আজকের টিউন।
এক নজরে দেখা যাক ‘মার্শম্যালোর’ নতুন ১০ টি আকর্ষনীয় ফিচার কি কি ?
1. গুগল নাউ অন ট্যাপ
2. ক্রোম কাস্টম ট্যাবস
3. দীর্ঘক্ষণ চার্জ সংরক্ষণে বিশেষ ব্যবস্থা
4. স্মার্ট ফিঙ্গার প্রিন্ট সমর্থন
5. ইউএসবি টাইপ ‘সি’ সমর্থিত দ্রুত চার্জিং ব্যবস্থা
6. অ্যাপ পার্মিশন সিস্টেম
7. অ্যান্ড্রয়েড পে
8. ডিরেক্ট শেয়ার
9. নতুন বুট অ্যানিমেশন
10. অ্যাপ ড্রয়ার সম্পাদনা
গুগল নাউ অন ট্যাপঃ নতুন সংস্করণের অ্যান্ড্রয়েড মার্শম্যালো অপারেটিং সিস্টেমে যুক্ত হওয়া অন্যতম ফিচার ‘গুগল নাউ অন ট্যাপ’। যার ফলে গুগলের সেবাসমূহ এখন থেকে ব্যবহারকারী আরও সহজে পাবেন। ফিচারটির সাহায্যে ব্যবহারকারী এখন থেকে অনলাইন কিংবা স্মার্টফোনে দ্রুততম সময়ে অ্যাপের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় তথ্য সার্চ করতে পারবেন। এজন্য স্মার্টফোন স্ক্রিনের যেকোন ফাঁকা স্থানে স্পর্শ করে ধরে রাখতে হবে। তাহলেই পাওয়া যাবে সংশ্লিষ্ট ফিচারটি। যেখানে লিখে কিংবা ভয়েস কমান্ড দিয়ে সার্চ করা যাবে।
ক্রোম কাস্টম ট্যাবস : অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে অনেক সময় কোনো লিঙ্কে ক্লিক করলে তা ফোন ব্রাউজারের ডিফল্ট অ্যাপে নিয়ে যায় কিংবা একটি উইজার্ডে ব্রাউজিং অ্যাপ উন্মোচিত হয়। যেখানে সিলেক্ট করতে হবে। এই ফিচারের পরিবর্তে অ্যান্ড্রয়েড মার্শম্যালো ওএসএ ব্যবহারকারী অ্যাপের জন্য পৃথক ক্রোম কাস্টম ট্যাব। যেখানে নতুন কোনো অ্যাপ ওপেনের ঝামেলা ছাড়াই পৃথক লিঙ্ক পাওয়া যাবে। যা ফোনের গতিকে অক্ষুণ্ন রাখতে বিশেষ কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলেই মনে করছেন গুগল অপারেটিং সিস্টেম বিভাগের নির্মাতারা।
দীর্ঘক্ষণ চার্জ সংরক্ষণে বিশেষ ব্যবস্থা : অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম চালিত স্মার্টফোনে চার্জ স্বল্পতা অনেক বড় সমস্যা। তাই স্মার্টফোনে এমন চার্জ সমস্যা সমাধানে অ্যান্ড্রয়েড ওএসে বিশেষ ব্যবস্থা যুক্ত করেছে নির্মাতা গুগল। যেখানে স্মার্টফোনের ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ্লিকেশন এবং একই সঙ্গে স্মার্টফোনে একাধিক অ্যাপ চালু রাখাসহ চার্জ বেশি ব্যয় করে এমন বিভিন্ন ত্রুটি নিয়ে কাজ করছে গুগল। এই ব্যবস্থা আগের সংস্করণের চেয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে ব্যাটারির চার্জ ব্যবস্থা পরিমাপে সক্ষম হবে।
স্মার্ট ফিঙ্গার প্রিন্ট সমর্থন : ইতিমধ্যে অনেক স্মার্টফোন নির্মাতই নিজস্ব ডিভাইসে ‘ফিঙ্গার প্রিন্ট বা ফিঙ্গার লক’ ব্যবস্থা যুক্ত করেছে। তবে ফিঙ্গার প্রিন্ট ব্যবস্থাকে আরও নিরাপদ এবং ব্যবহারবান্ধব করতে গুগল তাদের নতুন এই সংস্করণে যুক্ত করেছে স্মার্ট ফিঙ্গার প্রিন্ট ফিচার। এতে করে অ্যান্ড্রয়েড ওএস চালিত স্মার্টফোনে ফিঙ্গার প্রিন্ট স্ক্যানারের সাহায্যে অর্থ লেনদেন করা যাবে। এছাড়া ফোনের লক ব্যবস্থাতেও নতুন সিকিউরিটি নিয়ে আসবে এই ফিচারটি।
ইউএসবি টাইপ ‘সি’ সমর্থিত দ্রুত চার্জিং ব্যবস্থা : স্মার্টফোনের চার্জ দীর্ঘক্ষণ সংরক্ষণের পাশাপাশি যাতে ফোনের ব্যাটারি কর্মক্ষম এবং ভালো থাকে। বিষয়টিতে নজর দিয়ে ফোনে ডাটা ট্রান্সফার রেট বৃদ্ধিতেও গুরুত্বারোপ করেছে গুগল। এজন্য অ্যান্ড্রয়েড মার্শম্যালোতে দ্রুত স্মার্টফোন চার্জিংয়ে যুক্ত হয়েছে ‘ইউএসবি সি’ ব্যবস্থা। যার ফলে আগের মাইক্রোইউএসবি পোর্ট ব্যবস্থার চেয়ে তিন থেকে পাঁচ গুণ বেশি গতিতে চার্জ হবে স্মার্টফোন। যা সহজে স্মার্টফোন চার্জিংয়ে সহায়ক হবে। এর পাশাপাশি ডাটা কেবলের মাধ্যমে ফোনে তথ্য আদান-প্রদান হবে আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে দ্রুত।
অ্যাপ পার্মিশন সিস্টেম : গুগলের অবমুক্ত যে কোনো সময়ের অপারেটিং সিস্টেমের তুলনায় মার্শম্যালো অধিক নিরাপদ হতে যাচ্ছে। এজন্য নতুনভাবে অ্যাপ পার্মিশন ব্যবস্থা নিয়ে আসছে সার্চ জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানটি। কোনো অ্যাপ ডিভাইসে ইনস্টল করতে গেলে অ্যাপটি ফোনের কী তথ্য গ্রহণ করবে, সে সম্পর্কে ব্যবহারকারীকে বিস্তারিত জানানো হবে। এই অ্যাপ পার্মিশন ব্যবস্থাকে পৃথক আটটি বিভাগে ভাগ করা হবে। যা অ্যাপ ব্যবস্থাকে ব্যবহারকারীর জন্য আরও নিরাপদ করবে।
অ্যান্ড্রয়েড পে : অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম ললিপপের চেয়ে নতুন অনেক ফিচারে সাজবে অ্যান্ড্রয়েড মার্শম্যালো। আর এ অপারেটিং সিস্টেমে যুক্ত হবে স্মার্টফোনে অর্থ লেনদেনে গুগলের নির্মিত অ্যাপ ব্যবস্থা ‘অ্যান্ড্রয়েড পে’। যা সর্বনিম্ন অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে ৪.৪ [কিটক্যাট] এ পরবর্তী সময়ে ব্যবহার করা যাবে। তবে অ্যাপটি প্রথমবারের মতো যুক্ত করা হয়েছে অ্যান্ড্রয়েড ৬.০ মার্শম্যালো সংস্করণে।
ডিরেক্ট শেয়ার : অ্যান্ড্রয়েড মার্শম্যালো অপারেটিং সিস্টেমে এক ক্লিকে খুব সহজেই সোস্যাল মাধ্যমে ফোনে সংরক্ষিত ফাইল যেমন, ছবি কিংবা মিউজিক ফাইল বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করা যাবে। এতে করে ব্যবহারকারীর পৃথক সামাজিক সাইটে লগইনের প্রয়োজন হবে না।
নতুন বুট অ্যানিমেশন : অ্যান্ড্রয়েডের নতুন অপারেটিং সিস্টেমের সঙ্গে এবার পরিবর্তন এসেছে ফোন বন্ধ কিংবা ওপেন করার সময় প্রদর্শিত বুট অ্যানিমেশনে। যেখানে চারটি রঙিন বৃত্তাকার চিহ্নবিশেষ অ্যান্ড্রয়েড লোগোতে রূপ নেওয়ার আগ পর্যন্ত বিভিন্নভাবে পরিবর্তিত হয়।
অ্যাপ ড্রয়ার সম্পাদনা : নতুন অপারেটিং সিস্টেমকে ব্যবহারকারীর জন্য আরও সহজ এবং ব্যবহারবান্ধব করতে নির্মাতা গুগল যুক্ত করেছে অ্যাপ সম্পাদনার ফিচার ‘অ্যাপ ড্রয়ার কাস্টমাইজেবল টগেল’। যেখানে ব্যবহারকারী হাতের স্পর্শে প্রয়োজনীয় অ্যাপগুলো পৃথক ক্যাটাগরিতে সাজিয়ে রাখতে পারবেন। যাতে দরকারি মুহূর্তে বিভিন্ন অপশন না চেপে বরং সহজেই হাতের কাছে পাওয়া যাবে অ্যাপ।

পোস্টটি প্রথম প্রকাশিত হয় এখানে সতোজ্ঞান।

Thursday 3 September 2015

অনার্স ২য় বর্ষ পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০১৩ সালের অনার্স ২য় বর্ষ
পরীক্ষার ফলাফল গত ০১/৯/২০১৫ তারিখ প্রকাশিত হয়েছে।
প্রকাশিত ফলাফলের ব্যাপারে কোনো পরীক্ষার্থীর আপত্তি
থাকলে ফল প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে উত্তরপত্র পুন: নিরীক্ষণের
আবেদন করা যাবে।

আবেদনের পদ্ধতিঃকলেজের অধ্যক্ষের মাধ্যমে পরীক্ষানিয়ন্ত্রক
বরাবর সাদা কাগজে আবেদনকরতে হবে।
আবেদন পত্রের সাথে যা যা জমা দিতে হবেঃ সঙ্গে
রেজিস্ট্রেশন কার্ড, প্রবেশপত্র, ফলাফলের প্রিন্ট কপি
(ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া) এবং প্রতি পত্রের জন্য ৮০০ টাকা
হারে ব্যাংক ড্রাফট সংশ্লিষ্ট বিভাগে জমা দিতে হবে।

আবেদনের শেষ সময়ঃ আগামী ৩১/৯/১৫ তারিখের মধ্যে আবেদন
করতে হবে।

Monday 28 September 2015

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষে অনার্স এর আবেদন শুরু ১লা অক্টোবর থেকে

আর মাত্র দুই দিন বাকি...
তারপরেই শুরু হবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এর ভর্তি কার্যক্রম।

ইতিমধ্যে সবাই জেনেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি ২০১৫-২০১৬ প্রকাশিত হয়েছে।

আবেদন শুরু : ০১/১০/২০১৫
আবেদন শেষ: ২৫/১০/২০১৫
আবেদন ফি ২৫০ টাকা।

এবছর কোন ভর্তি পরীক্ষা হবে না।মোট জিপিএ এর
ভিত্তিতে ভর্তি করানো হবে।
ক্লাস শুরু : ১লা ডিসেম্বর

শিক্ষামূলক যাবতীয় পোস্ট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।
শেয়ার করে অন্যদের পড়ার সুযোগ করে দিন।

Saturday 26 September 2015

গ্রেট বৃটেন এবং আয়ারল্যান্ড-এর ইতিহাস (History of Grate Britain & Ireland)

আমরা যখন ফ্রান্স বলি, তখন ফ্রান্সকেই বোঝাই। একই ভাবে যখন জার্মানী বলি তখন জার্মানীকে এবং
সুইডেন বললে সুইডেনকে। কিন্তু আমরা যখন UK তথা ইউনাইটেড কিংডম বলি তখন কাকে বোঝাই?


ইরাক যুদ্ধে বৃটেনের সৈন্য পাঠানো নিয়ে অনেক
চায়ের কাপে ঝড় তোলা হয়েছে; তাহলে প্রশ্ন হলো
বৃটেনই বা কারা? ডলার-পাউন্ডের কনভার্সনের
ওয়েব পেইজে গেলে লেখা দেখি GBP অর্থাৎ গ্রেট
বৃটেন পাউন্ড। তাহলে এই গ্রেট বৃটেনটাই বা কোথা
থেকে এলো? প্রশ্নগুলো আরো জটিল হয়ে যায় যখন
দেখি ইংল্যান্ড বলে একটা দল ফুটবল খেলে অথচ
তাদের কখনো রাজনীতির মঞ্চে দেখা যায় না।
ইংল্যান্ডের ক্রিকেট বোর্ডের নাম শুনলেতো
মাথা আরো ঘোরে - ই.সি.বি এর পূর্নাঙ্গ অর্থ
ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড! ওয়েলসটাই
বা কোথা থেকে আসলো? স্কটল্যান্ড বলেওতো
একটা দেশ আছে, বিশ্বকাপ ক্রিকেটে দেখা
গিয়েছে তাদের কয়েকবার। ঐদেশে যেতে চাইলে
কোন এ্যাম্বেসিতে ভিসার জন্য দাড়াতে হবে?


প্রশ্নগুলো একেবারে চরম জট পাকিয়ে যায় যখন
দেখা যায় ফুটবলে দুইটা আয়ারল্যান্ড - নর্দার্ন
আয়ারল্যান্ড এবং রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ড অথচ
ক্রিকেট, হকি বা রাগবীতে একটা দল -
আয়ারল্যান্ড। যারা ইয়াহু ব্যবহার করেন তারা
দেখতে পান UK এর পেইজটায় গেলে লেখা ওঠে UK
and Ireland। স্বাভাবিক ভাবেই মনে প্রশ্ন জাগে
কেন?


উপরের প্রশ্নগুলোর উত্তর আপাত দৃষ্টিতে হয়তো
বিচ্ছিন্ন মনে হচ্ছে, কিন্তু প্রকৃত পক্ষে এরা একই
সূত্রে গাঁথা। গ্রেট বৃটেন এবং আয়ারল্যান্ড এর গত
এক হাজার বছরের ইতিহাসই পারে এই প্রশ্নগুলোকে
সঠিক ভাবে ব্যাখ্যা করতে।


আদি অবস্থা - গ্রেট বৃটেন এবং আয়ারল্যান্ড
ইউরোপের পশ্চিম পাশ ঘেঁষে দুটো দ্বীপ রয়েছে -
গ্রেট বৃটেন এবং আয়ারল্যান্ড। কয়েক হাজার বছর
আগের ঘটনা, তখনও রাষ্ট্র ধারনার প্রসার ঘটেনি
বরং রাজ্য ব্যবস্থাই ছিল রাজনীতির সর্বোচ্চ
পর্যায়। সে সময় গ্রেট বৃটেন দ্বীপে তিনটি রাজ্য
ছিল - ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড এবং ওয়েলস।


ইংল্যান্ড বিভিন্ন বংশের রাজা ও রানীদ্বারা
শাসিত হয়ে আসছে আজও তবে পদবীর মৌলিক
পরিবর্তন হয়েছে দুইবার (পরে ব্যাখ্যা করা হবে)।
স্কটল্যান্ড কয়েকবার স্বাধীনতা হারালেও ১৭০৭ সন
পর্যন্ত কম বেশি স্কটিশ রাজাদের দ্বারা শাসিত
হয়ে এসেছে। অপর দিকে ওয়েলস ১২৮২ সন পর্যন্ত
বিভিন্ন চড়াই-উৎরাই পার হয়ে নিজস্ব
শাসকদ্বারা শাসিত হয়ে এসেছে তবে ইংল্যান্ড
বা স্কটল্যান্ড এর মত এতটা ঐক্যবদ্ধ তারা কখনই
ছিল না।


অপর দিকে আয়ারল্যান্ড দ্বীপ জুড়ে ছিল একটি
রাজ্য আয়ারল্যান্ড। ১১৯৮ সন পর্যন্ত এই রাজ্যটি একক
রাজার শাসনে ছিল যাদের বলা হতো হাই কিং অব
আয়ারল্যান্ড কিন্তু পরবর্তিতে ছোট ছোট রাজার
অধীনে বিচ্ছিন্ন ভাবে দ্বীপটি শাসিত হয়েছে
১৫৪১ সন পর্যন্ত।


ইংল্যান্ড কতৃক স্কটল্যান্ড এবং ওয়েলস আক্রমন
বরাবরই গ্রেট বৃটেন দ্বীপের সবচেয়ে শক্তিশালী
রাষ্ট্র ছিল ইংল্যান্ড। রাজা প্রথম এডওয়ার্ড-এর
সময় ইংল্যান্ড এতটাই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে যে পুরো
গ্রেট বৃটেনকেই নিজেদের দখলে আনার চেষ্টায়
লিপ্ত হয়। এ সময় ইংল্যান্ড ওয়েলস দখল করে এবং
স্কটল্যান্ডকে প্রায় দখল করে ফেলার মত অবস্থায়
চলে যায় যদিও পরে প্রথম এডওয়ার্ড-এর মৃত্তুর পর আর
সেটা সম্ভব হয়নি।


১২৮২ সনে ওয়েলসের সর্বশেষ শাসক লিওয়েলিন দ্যা
লাস্টকে পরাজীত ও হত্যা করে এডওয়ার্ডের ইংরেজ
বাহিনী ওয়েলস দখল করে। ওয়েলস বিজয়ের পর
এডওয়ার্ড তার ছেলের সম্মানে প্রিন্স অব ওয়েলস
উপাধীটি প্রদান করে। সেই থেকে আজও
যুক্তরাজ্যের রাজা বা রানীর বড় ছেলেকে প্রিন্স
অব ওয়েলস বলা হয়।


অপর দিকে ১২৯৬ সনে ইংল্যান্ড প্রথম স্কটল্যান্ড
আক্রমন করে। যদিও প্রথমদিকে স্কটিশ বীর
উইলিয়াম ওয়ালেস-এর প্রতিরোধে ইংল্যান্ড থমকে
যাচ্ছিল তবে পরবর্তিতে ওয়ালেসকে নিষ্ঠুর ভাবে
হত্যা করে তারা স্কটল্যান্ড দখলের কাছাকাছি
চলে যায়। মেলগিবসন অভিনীত জনপ্রিয় চলচিত্র
ব্রেভ হার্ট ওয়ালেসরই জীবনের উপর নির্মিত।
কিন্তু ওয়ালেসের মৃত্ত্বুর পর রাজা রবার্ট ব্রুস-এর
স্কটিশ বাহিনী আবারও সংঘটিত হয় এবং রাজা
এডওয়ার্ডের মৃত্ত্বুর পর তার ছেলের ব্যর্থতাকে
কাজে লাগিয়ে স্কটিশরা ইংরেজদের পরাজীত
করে স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা অক্ষুন্ন রাখে। ব্রুসের
মৃত্ত্বুর পর ১৩৩২ সন থেকে ১৩৫৭ সন পর্যন্ত আবার
ইংরেজরা স্কটল্যান্ড দখলের চেষ্টা চালায় যদিও
সেবারও তারা পরাজীত হয়।


১৫৪১ - কিংডম অব আয়ারল্যান্ড গঠন:
আয়রল্যান্ডকে কখনও ব্যপকভাবে সামরিক শক্তি
দিয়ে আক্রমন না করলেও ইংল্যান্ড রাজত্বের একটি
চাপ সব সময়ই আয়ারল্যান্ডের উপর ছিল। এ কারনেই
১৫৪১ সনে আইরিশ পার্লামেন্ট (রাজত্ব থাকলেও
দেশগুলোতে পার্লামেন্ট সক্রিয় ছিল) ক্রাউন অব
আয়ারল্যান্ড এ্যাক্ট ১৫৪২ পাশের মধ্য দিয়ে কিংডম
অব আয়ারল্যান্ড প্রতিষ্ঠা করে এবং নির্ধারিত হয়
যে ইংল্যান্ডের রাজা বা রানীই হবেন
আয়ারল্যান্ডের রাজা বা রানী। শাসন ব্যবস্থার
এই ধরনটাকে পার্সোনাল ইউনিয়নও বলা হয়। এ
ক্ষেত্রে শাসক এক হলেও রাজ্য দুটো আলাদা ভাবে
স্বাধীন এবং স্বতন্ত্র ছিল। রাজা অষ্টম হেনরী
ছিল প্রথম কিং অব আয়ারল্যান্ড। একারনেই হেনরী
সহ পরবর্তি রাজাদের দুটো করে পদবী ছিল - কিং
অব ইংল্যান্ড এবং কিং অব আয়ারল্যান্ড। (উদাহরন
- রাজা চতুর্থ এডওয়ার্ড, প্রথম মেরী, রানী প্রথম
এলিজাবেথ ইত্যাদি।)


১৫৪২ - ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলস গঠন:
১৫৩৫ সন থেকে ১৫৪২ সন পর্যন্ত ইংলিশ পার্লামেন্ট
ল'স ইন ওয়েলস এ্যাক্টস ১৫৩৫-১৫৪২ পাশের মধ্যদিয়ে
ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসকে একিভূত করে ইংল্যান্ড
এন্ড ওয়েলস গঠন করে। এই ব্যবস্থায় ওয়েলসের আর
কোন আইন ব্যবস্থা থাকলো না এবং তারা ইংলিশ
আইনের আওতাভুক্ত হয়। তাদের কোন পার্লামেন্ট
বলেও কিছু থাকলো না (১৯৯৯ সন পর্যন্ত। পরে
ব্যাখ্যা রয়েছে)। সেই থেকে অনেক কিছুতেই ওয়েলস
ইংল্যান্ডের অংশ হিসেবে অংশ নেয় এবং
ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড-ও এরই একটা
উদাহরন।


১৭০৭ - কিংডম অব গ্রেট বৃটেন গঠন:
রানী প্রথম এলিজাবেথ-এর মৃত্ত্বুর পর ইংল্যান্ডের
রাজবংশের কোন উত্তরাধিকারী ছিল না কেননা
রানী এলিজাবেথ কুমারী ছিলেন। ফলে ইংল্যান্ড
এবং আয়ারল্যান্ড রাজ্য আক্ষরিক অর্থেই এক
সংকটে পতিত হয়। মজার ব্যাপার হচ্ছে ১৫০৩ সনে
স্কটল্যান্ডের রাজা চতুর্থ জেমস ইংল্যান্ডের
রাজা সপ্তম হেনরীর কন্যা মারগারেটকে বিয়ে
করেছিলেন। কাকতালীয় ভাবে ঠিক একশ বছর পর এই
সম্পর্কের সূত্র ধরে ১৬০৩ সনে স্কটল্যান্ডের রাজা
ষষ্ঠ জেমস ইংল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ডের
রাজত্বভার গ্রহন করেন এবং সমগ্র গ্রেট ব্রিটেনের
রাজা হন। ঐতিহাসিক ভাবে এ ঘটনাকে ইউনিয়ন অব
ক্রাউন বলা হয়। যদিও তখন পর্যন্ত ইংল্যান্ড এবং
স্কটল্যান্ড দুটো আলাদা রাজ্য হিসেবে পরিচালিত
হচ্ছিল। তাৎপর্যপূর্ন বিষয় হলো কিংডম আব
ইংল্যান্ড, কিংডম অব স্কটল্যান্ড এবং কিংডম অব
আয়ারল্যান্ড স্বাধীন তিনটি রাজ্য হওয়া সত্বেও
তাদের শাসক ছিলেন একই ব্যাক্তি।


১৭০৭ সনে আলাদা ভাবে ইংল্যান্ডের এবং
স্কটল্যান্ডের পার্লামেন্টে এ্যাক্ট অব ইউনিয়ন ১৭০৭
পাশ করা হয় যার মাধ্যমে কিংডম অব ইংল্যান্ড
এবং কিংডম অব স্কটল্যান্ডকে বিলুপ্ত করে কিংডম
অব গ্রেট বৃটেন গঠন করা হয়। ১ মে ১৭০৭ রানী এ্যান
প্রথম কুইন অব গ্রেট বৃটেনের দায়িত্ব গ্রহন করেন
এবং সেদিন থেকেই ইতিহাসে কিংডম অব গ্রেট
ব্রিটেন শব্দটির ব্যবহার শুরু হয়। একই সাথে সেদিন
থেকেই কিং অব ইংল্যান্ড এবং কিং অব
স্কটল্যান্ড শব্দদুটিও ইতিহাসের পাতা থেকে
বিলুপ্ত হয়ে যায়।


১৮০০ - ইউনাইটেড কিংডম অব গ্রেট বৃটেন এন্ড
আয়ারল্যান্ড গঠন
তখন পর্যন্ত আয়ারল্যান্ড স্বাধীন রাজ্য হিসেবে
পরিচালিত হলেও শাসিত হতো গ্রেট বৃটেনের
রাজার দ্বারাই। ফলে ধীরেধীরে আরেকটি
ইউনিয়নের সম্ভাবনা বেশ জোরালো হয়ে ওঠে।


১৮০০ সনে রাজা তৃতীয় জর্জ-এর সময় গ্রেট ব্রিটেন
এবং আয়ারল্যান্ডের পার্লামেন্টে এ্যাক্ট অব
ইউনিয়ন ১৮০০ পাশ করা হয় এবং পরের বছরই অর্থাৎ
১৮০১ সনে দুটো রাজ্যকে এক করে একটি অভিন্ন রাজ্য
গঠন করা হয় যার নাম ইউনাইটেড কিংডম অব গ্রেট
বৃটেন এন্ড আয়ারল্যান্ড। ১ জানুয়ারী ১৮০১-এ
ইতিহাসে প্রথমবারের মত ইউনাইটেড কিংডম
শব্দটি ওঠে এবং রাজা তৃতীয় জর্জ এই রাজ্যের প্রথম
রাজা হন।


পরবর্তিতে আরো ১২২ বছর এই রাজ্য পৃথিবীর
বিভিন্ন এলাকা শাসন করে ১৯২২ সনে নিজের ঘরে
ভাঙ্গনের মুখে পতিত হয় এবং জন্ম হয় রিপাবলিক
অব আয়রল্যান্ড নামের একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের।

Friday 25 September 2015

এইচ নাকি হেইচ (Pronunciation of H)

উচ্চারণ কি হবে, এইচ নাকি হেইচ?এ নিয়ে বন্ধুরা প্রায় আলোচনা ও বিতর্কে জরিয়ে পড়ি। তাই ইন্টারনেট এ সার্চ দিলাম,রিজাল্ট ও পেলাম বেশ।অবশেষে অনুসন্ধানকৃত একটি নিবন্ধ আপনাদের সাথে হুবহু তুলে ধরলাম :

এইচ থেকে হেইচ – ভাষার বিবর্তন
লিখেছেন :নিয়াজ মোর্শেদ
আমি ইংরেজী H-কে “হেইচ” উচ্চারণ করি। এতে
আমার ছোট বোনের ব্যাপক আপত্তি। তার ভাষায়
এটা নাকি স্কটল্যান্ডের মানুষরা যারা একটু “নীচু
প্রকৃতি”র, তারা উচ্চারণ করে থাকে। “স্ট্যান্ডার্ড
ইংরেজী” অনুসারে এটা ভুল। তার কোন এক
প্রফেসারকে নাকি একজন “খাঁটি” আইরিশ
ভাষাবিদ “হেইচ” উচ্চারণ করতে মানা করেছে।
আমার ছোট বোনের এই মন্তব্যের জবাবে সাড়ে সাত
ঘণ্টা গবেষণা করে এবং কিছু ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা
দিয়ে নিচের পোস্টটা তৈরি করলাম।
“হেইচ” বিষয়ে আমার মনে হচ্ছে অনেকের ভুল ধারণা
রয়েছে। আমি ভাষাবিদ নই, তাই ভাষার খুঁটিনাটী
আমি ভালো জানি না। তবে ইতিহাস এবং
ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে বিষয়টাকে ব্যাখ্যা
করার চেষ্টা করবো এখানে।
প্রথমেই একটা বিষয় নিয়ে কথা বলার প্রয়োজন মনে
করছি। বাংলাদেশে থাকতেও আমি বেশ কয়েকবার
এই বিষয়টি শুনেছি। স্কটল্যান্ডের মানুষরা নাকি
নীচু বা “গাইয়া” প্রকৃতির। এটা মূলতঃ ভাষার কথা
প্রসঙ্গে অনেকে বলে থাকেন যখন ইংরেজীর
তথাকথিত স্ট্যান্ডার্ড-এর সাথে ডাইল্যাক্টগুলোর
তুলনা হয়। কিন্তু বিষয়টা সম্পূর্ণ ভুল। স্কটল্যান্ডের
মানুষ “স্কটিশ ইংলিশ”-এ কথা বলে। এখানে নীচু
বা গ্রাম্য বা অশিক্ষিত হবার কিছু নেই। শিক্ষিত-
অশিক্ষিত, ধনী-গরীব নির্বিশেষে তারা এই
ভাষাতেই কথা বলে। তাছাড়া একটা ভাষাকে
কিসের উপর ভিত্তি করে স্ট্যার্ন্ডাডাইজড করা
হবে? ইংল্যান্ডের মানুষ যে ভাষায় কথা বলে
সেটাই স্ট্যান্ডার্ড ইংলিশ? আর অন্য সব নীচু
প্রকৃতির? তাহলেতো এ্যামেরিকার মানুষ সব
“গাইয়া”। বর্তমান যুগে সেটা কেউ বলতে সাহস
করবে না কেননা এ্যামেরিকার অর্থনীতি
ইংল্যান্ডের থেকে শক্তিশালী। তাই এখন বলা হবে
ওটা “এ্যামেরিকান ইংলিশ”, ওটাও একটা
স্ট্যান্ডার্ড। তাহলে স্কটিশ ইংলিশকে
স্ট্যান্ডার্ড ইংলিশগুলোর একটি হিসেবে স্বীকৃতি
দিতে সমস্যা কোথায়?
এবার আসা যাক হেইচ প্রসঙ্গে। হেইচ স্কটিশ
ইংলিশ থেকে আসে নি, এসেছে হাইবার্নো
ইংলিশ থেকে। তবে স্কটরাও হেইচ বলে যার কারণ
ইতিহাসে লুকানো। শুরুতেই একটু ব্যাখ্যা করে
নিচ্ছি বিষয়টা। “স্কট” শব্দটা ল্যাটিন “স্কটি”
থেকে এসেছে যার সরল ইংরেজী অর্থ “আইরিশ”।
প্রায় দুই হাজার বছর আগে গ্রেট বৃটেন দ্বীপের উপর
এবং নীচের অংশে দুটো গুরুত্বপূর্ণ “মাইগ্রেশন”
ঘটে। এই সময় আয়ারল্যান্ড দ্বীপ থেকে “গেইল”
নামক একটা গোষ্ঠী নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড দিয়ে
গ্রেট বৃটেন দ্বীপে চলে যায় যেখানে তারা স্থায়ী
ভাবে বসতী গড়ে বসবাস করতে শুরু করে। ঐ সময়
বৃটেনের নীচের অংশে রোমান শাসন ছিল যারা এই
মানুষগুলোকে স্কটি বলতো (তবে ইতিহাসে স্কটি
শব্দটার উল্লেখ পঞ্চম শতকের আগে দেখা যায় নি)।
পরবর্তীতে কালক্রমে স্কটদের দেশ হিসেবে ঐ
এলাকার নাম হয় স্কটল্যান্ড। উল্লেখ্য যে
আয়ারল্যান্ড থেকে যাবার সময় গেইলরা তাদের
সংস্কৃতি এবং ভাষা (“গেইলিক”) নিয়ে গিয়েছিল
যার কারণে স্কটল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ডের
সংস্কৃতির এত সাদৃশ্য। আরেকটা মজার ব্যাপার
হচ্ছে, বৃটেনে রোমান শাসন কালে তারা কখনই
স্কটদের হারাতে পারে নি। ফলে রোমান সম্রাট
হেডরিয়ানের সময় ১২২ সনে বৃটেনের মাঝ দিয়ে
বর্তমান যুগের হিসেবে ১১৭ কিলোমিটার একটা
দেয়াল তুলে স্কটদের আলাদা করে দেয়া হয় যাতে
তারা নীচের দিকে আসতে না পারে। শুধু দেয়াল
দিয়েই তারা ক্ষান্ত হয় নি। এই দেয়ালের ঠিক
পেছনেই ছিল রোমান সেনা ব্যারাক যারা
সার্বক্ষণিক নজর রাখতো সীমানায়। উল্লেখ্য যে এই
দেয়াল কালের সাক্ষি হয়ে আজও টিকে আছে। তবে
ইংল্যান্ডের বর্তমান সীমা আরো সামনে সরে
যাওয়াতে এই দেয়াল আধুনিক ইংল্যান্ডের মধ্যে
পড়েছে, ইংল্যান্ড-স্কটল্যান্ড সীমানায় নয়।
লন্ডনের ব্রিটিশ মিউজিয়ামে এই দেয়ালের একটা
মিনিয়েচার রয়েছে যা গতবছর লন্ডন ভ্রমনের সময়
দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল।
এবার দৃষ্টি ফেরাচ্ছি ইংল্যান্ডের দিকে। রোমান
শাসনের কারণে বৃটেনের নিচের অংশে ব্যাপক
উন্নতি হয়। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রোমানদের তৈরি
করা একটা নগর যার নাম “লন্ডন”। কালের ঘড়ি যখন
এগিয়ে চলছিল, তখন পঞ্চম শতকের দিকে রোমান-
জার্মান থেকে “এংলো-স্যাক্সোন” নামক একটা
গোষ্ঠী গ্রেট বৃটেন দ্বীপের নীচের অংশে এসে
বসবাস করতে শুরু করে। তাদের ভাষার নাম ছিল
“এ্যাংলিশ” যেখান থেকে বর্তমান ইংলিশ এসেছে
এবং তাদের নামানুসারে ঐ এলাকার নাম হয়
ইংল্যান্ড, তবে সেটা আরো অনেক পরে। ষষ্ঠ শতকে
কিং আর্থার তাদের পরাজিত করে
(রিকোম্যান্ডেড মুভি - কিং আর্থার) বৃটনদের পক্ষ
থেকে শাসন প্রতিষ্ঠা করে। আরো পরে ৭৪৭ সনের
দিকে কিং অব মার্সিয়া ওফ্ফা আংশিক ভাবে
কিং অব এ্যাংলেস হয়। তাকেই ইংল্যান্ডের প্রথম
রাজা হিসেবে ধরা হয়। তবে ১০৬৬ সনে ফ্রান্স
থেকে আসা নর্মানরা বর্তমান ইংল্যান্ড এলাকা
দখল করে নেয় এবং এর পর থেকেই মূলতঃ
শক্তিশালী রাজ্য হিসেবে ইতিহাসে ইংল্যান্ডের
পাদচারণা শুরু হয়। উল্লেখ্য যে নর্মান জাতি
এসেছে ফ্রান্স থেকে তবে তাদের আদি জাতি
“ভাইকিং” এসেছে স্ক্যান্ডেনেভিয়া থেকে।
এজন্যে ইংরেজী ভাষায় এই সব এলাকার শব্দের
কোন না কোন ভাবে প্রবেশ রয়েছে। তবে নর্মানরা
দখল করে নেয়ার পর থেকে ইংরেজী শব্দে রোমান
শব্দের প্রভাব কমতে শুরু করে এবং ফ্রেন্স শব্দ
বাড়তে থাকে ব্যাপক ভাবে।
যাইহোক, ইংল্যান্ড যখন গড়ে উঠছিল, তখন
স্কটল্যান্ড বসে ছিল না। ধীরেধীরে ঐক্যবদ্ধ হওয়া
স্কটরা ৮৪৩ সনে প্রতিষ্ঠিত করেছিল “কিংডম অব
স্কটল্যান্ড”। অন্যদিকে ইংল্যান্ডের পাশেই
বৃটেনের একটা কোনায় গড়ে উঠেছিল আরেকটি
রাজ্য। এই রাজ্যের নাম ওয়েলস (ষষ্ঠ শতকে কিং
আর্থারের রাজ্য মূলতঃ বর্তমান ওয়েলস এর
সীমানায় ছিল)। তবে ওয়েলসকে কিংডম বলা হতো
না বরং বলা হতো “প্রিন্সিপালিটি” এবং এর
শাসককে বলা হতো “প্রিন্স”। আর বৃটেনের পাশের
দ্বীপ আয়ারল্যান্ডে তখন অনেকগুলো রাজ্য ছোট
ছোট ভাগে বিভক্ত হয়ে শাসন করছিল। নর্মানরা
ওয়েলস, স্কটল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ড – এই তিন
এলাকাকে দখল করার জন্য মরিয়া হয়ে ছিল যদিও
সেটা সফল করতে আরো দুইশ বছর অপেক্ষা করতে
হয়েছিল। ইংল্যান্ডের রাজা এ্যাডওয়ার্ড (যাকে
লংশ্যাংস বলা হতো) ছিল নিশ্ঠুরতম শক্তিশালী
রাজা। তার তীব্র আকাঙ্ক্ষা ছিল চারটা রাজ্যকে
এক করে একটা রাজ্য বানানোর। সেই উদ্দেশ্যে সে
একের পর এক আক্রমণ করে চলেছিল ওয়েলস,
আয়ারল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ড। প্রথম দুটোতে সফল
হলেও প্রায় দখল করে বসা স্কটল্যান্ডকে শেষ
পর্যন্ত ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছিল এ্যাডওয়ার্ড দুইজন
মহানায়কের কারণে - প্রথমে উইলিয়াম ওয়ালেস
এবং পরে রবার্ট ব্রুস দ্যা গ্রেট (রিকোম্যান্ডেড
মুভি - ব্রেভ হার্ট) বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। তবে তার
থেকেও বড় বাঁধা হয়ে এসেছিল সম্ভবত মৃত্যু। তার
মৃত্যুর পর তার ছেলে দ্বিতীয় এ্যাডওয়ার্ড রবার্ট
ব্রুসের হাতে পরাজিত হয়ে স্কটল্যান্ড ছাড়তে বাধ্য
হয়। এই প্রসঙ্গে স্কটল্যান্ডের সবচেয়ে শক্তিশালী
রাজা রবার্ট ব্রুসের একটা মন্তব্য বেশ মজার। ব্রুস
একবার বলেছিল, “আমি জীবিত দ্বিতীয়
এ্যাডওয়ার্ডকে যতটা পরোয়া করি, তার থেকে
অনেক বেশী পরোয়া করি মৃত প্রথম এ্যাডওয়ার্ডকে”।
যাইহোক, স্কটল্যান্ড দখল করতে না পারলেও অন্য
দুটোতে ভালোই কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিল
এ্যাডওয়ার্ড। সে ১২৭৭ সনের ১১ ডিসেম্বর ওয়েলস এর
প্রিন্সকে হত্যা করে ওয়েলস দখল করে নেয়। সেই
থেকে ওয়েলস ইংল্যান্ডের অংশ হিসেবে গণ্য
হচ্ছে। ওয়লেস দখলের পর এ্যাডওয়ার্ড তার ছেলেকে
“প্রিন্স অব ওয়েলস” ঘোষণা করে এবং সেই থেকে
আজও ইংল্যান্ডের রাজা/রানীর বড় ছেলের
টাইটেল প্রিন্স অব ওয়েলস। সরল ভাষায় বললে বলা
যায় এটা একটা লুণ্ঠিত টাইটেল। যাইহোক, ওয়লেস
দখলের পর প্রথম যে কাজটা ইংরেজরা করে সেটা
তাদের ভাষাকে “পুশ” করা যার ফলে ওয়েলসের
নিজের ভাষা “ওয়েলশ” ধীরেধীরে মৃত্যুবরণ করে।
গতবছর ওয়েলস দিয়ে যাবার সময় লক্ষ্য করি তারা
খুব গর্বের সাথে জানাচ্ছে তারা একটা
বাইলিঙ্গুয়াল দেশ। ২০০৫ সনে ওয়েলস এর রাষ্ট্রিয়
অস্তিত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর তাদের অন্যতম লক্ষ্য
হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের ভাষাকে বাঁচিয়ে তোলা।
উল্লেখ্য যে ওয়েলস-এর ইংলিশ ডাইলেক্টটা
ইংরেজী এবং ওয়লেশ ভাষার মিশ্রণে তৈরি। এতে
“গেয়ো”, “অশিক্ষিত” বা “নীচু” শ্রেনীর কোন ভেদ-
বিভেদ নেই।
এবার দৃষ্টি ঘোরাচ্ছি আয়ারল্যান্ডের দিকে।
এ্যাডওয়ার্ডের শাসনের প্রায় একশ বছর আগের
ঘটনা। ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় হেনরীর পাঁচ
ছেলের মধ্যে সবচেয়ে ছোট ছিল জন। মানুষ তাকে
একটা অদ্ভুত নামে ডাকতো – “জন দ্যা
ল্যাকল্যান্ড”। এই নামের কারণ ছিল বাবার
সবচেয়ে ছোট ছেলে হওয়াতে শাসন করার মত জনের
কোন এলাকা ছিল না। ঐ সময় হেনরী পাশের দ্বীপ
আয়ারল্যান্ড এর একটা ক্ষুদ্র এলাকা দখল করতে
সক্ষম হয় যার নাম “ডাবলিন”। ছেলেকে খুশি করার
জন্যে সেই এলাকায় লর্ডশিপ প্রতিষ্ঠা করে জনকে
প্রেরণ করা হয় আয়ারল্যান্ডের প্রথম লর্ড হিসেবে।
শাসক হিসেবে ইংল্যান্ডের রাজ বংশের এটাই
আয়ারল্যান্ডে প্রথম আগমন। এবার যে গল্পটা বলবো
সেটা আমি বেশ কয়েকবার আইরিশ বন্ধুদের থেকে
শুনেছি। জন যখন প্রথম ডাবলিনে আসে তখন তাকে
অভ্যর্থনা জানাতে আইরিশদের পক্ষ থেকে একটা
প্রতিনিধি দল এসেছিল। তাদের পোশাক দেখে জন
তাচ্ছিল্যের সাথে বলেছিল “এই সব ছোটলোক
কোথা থেকে এসেছে”। ফলে আইরিশরা ক্ষিপ্ত হয়ে
অভ্যর্থনা না দিয়েই চলে যায়। এই গল্পের একটা
তাৎপর্য আছে, সেটা হলো - আয়ারল্যান্ডে ইংরেজ
শাসনের প্রথম মুহূর্তেই তারা “এরিস্টোক্রেট” এবং
তথাকথিত নীচু স্তরে ভাগ করে ফেলেছিল এখানকার
মানুষকে। এরই রেশ ধরে পরবর্তীতে ক্ষমতায় থাকা
ইংরেজ এবং তাদের কাছের আইরিশরা নিজেদের
মনে করতো সম্ভ্রান্ত এবং সাধারণ আইরিশদের
মনে করতো নীচু স্তরের। ফলে আয়ারল্যান্ডে তৈরি
হয় দুটো মেরুর। সাধারণ আইরিশরা গেইলিক
উচ্চারণের সাথে মিলিয়ে ইংলিশ বলতে শুরু করে
কিন্তু যারা ইংরেজদের কাছের মানুষ ছিল, সেইসব
আইরিশরা নিজেদের ভাষাকে ছেড়ে পরিপূর্ণ
ইংরেজ হয়ে উঠার চেষ্টা করে। অবিশ্বাস্য হলেও
সত্য, আজ এক হাজার বছর পরও এই বিষয়টা
আয়ারল্যান্ডের একটা অংশে এখনও বিদ্যমান।
যথাসময়ে সেটা বলবো। যাইহোক, আয়ারল্যান্ডের
প্রথম লর্ড জনের ভাগ্য রাতারাতি বদলে যায় তার
বড় চার ভাইয়ের একের পর এক মৃত্যুতে। ফলে বাবার
পঞ্চম সন্তান হওয়ার পরও সে রাজত্ব পেয়ে যায়
এবং আয়ারল্যান্ড ছেড়ে ইংল্যান্ডে গিয়ে কিং অব
ইংল্যান্ড-এর দায়িত্ব ভার গ্রহণ করে। পরবর্তীতে
এই জন ইতিহাসে দারুণ বিখ্যাত (অথবা কুখ্যাত) হয়ে
উঠে যখন তার সাথে যুদ্ধ বাধে রবিন হুড-এর
(রিকোম্যান্ডেড মুভি - রবিন হুড)। তবে সে গল্প
আমাদের অলোচ্য বিষয়বস্তু নয়। ফলে জনের ইতিহাস
এখানেই শেষ করছি।
পরবর্তী একশ বছর ইংরেজ আগ্রাসন চলে
আয়ারল্যান্ডের ভাষার উপর দিয়ে। যখন প্রথম
এ্যাডওয়ার্ড ক্ষমতায় আসে (যার গল্প জনের আগে
বলছিলাম) ততদিনে আইরিশ ভূমিতে ইংরেজরা
বেশ ভালো ঘাঁটি বেঁধে ফেলেছে। এ্যাডওয়ার্ড
সেটাকে আরো উস্কে দেয়। ওয়েলস-এর টুরিজমের
ওয়েব সাইটে পড়েছিলাম, এই সময়টায় ওয়েলস এবং
আয়ারল্যান্ড থেকে বিলুপ্ত হতে শুরু করে তাদের
নিজেদের ভাষা। আর গড়ে উঠতে শুরু করে
হাইবার্নো ইংলিশ। ইংরেজীর এই ডাইল্যাক্টটার
বিশেষত্ব হচ্ছে, এটা গেইলিক উচ্চারণে ইংরেজী
বলে। এই ডাইল্যাক্টের “হাইপারকারেশন”-এর
প্রভাবে এ্যাংলো ইরেজীর বেশ কিছু “নিশ্চুপ
অক্ষর” উচ্চারিত হতে শুরু করে। এর মধ্যে অন্যতম
“আর” এবং “হেইচ”। ইংরেজরা যেখানে R কে
উচ্চারণই করে না (নন-রোটিক এ্যাকসেন্ট) সেখানে
আইরিশ, স্কট এবং ওয়েলশরা (কেলটিক জাতিগুলো)
এটাকে গভীর ভাবে উচ্চারণ করে (রটিক
এ্যাকসেন্ট)। যেমন, ইংল্যান্ডে বলে, “ইউ আ‘ মাই
বা‘দা‘”। আয়ারল্যান্ডে বলে, “ইউ আ‘ঢ় মাই
ব্রাদা‘ঢ়”। এই প্রমিনেন্ট R এর উচ্চারণ এখন ব্রিটিশ
এবং এ্যামেরিকান ইংরেজীর অন্যতম প্রভেদ
সৃষ্টিকারি মানদণ্ড (কীভাবে সেটা হলো, সেটা
আরো পরে ব্যাখ্যা করবো)। এরই মত H-এর উচ্চারণও
সাধারণ আইরিশরা করতে শুরু করে “হেইচ” কেননা
গেইলিকে উচ্চারণটা এমন।
কেটে যেতে থাকে সময়। ষোড়ষ শতকের ঘটনা।
“পার্সোনাল ইউনিয়ান”-এর মাধ্যমে আয়ারল্যান্ড
তখন পুরোপুরি ইংরেজ রাজার দখলে। ১৫৮৩ সনে
স্যার গিলবার্ট আয়ারল্যান্ড থেকে যাত্রা শুরু করে
আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে নিউফাওন্ডল্যান্ডে গিয়ে
পৌঁছান এবং সেই এলাকাকে ইংল্যান্ডের কলোনি
হিসেবে ঘোষণা করেন। উল্লেখ্য যে নর্থ
আমেরিকায় এটাই প্রথম ইংরেজ কলোনি। এরপর
স্রোতের মত আইরিশরা মাইগ্রেন্ট হতে শুরু করে
নর্থ আমেরিকায়, সাথে নিয়ে যেতে থাকে তাদের
ভাষা। ১৮৪৫ সনে আয়ারল্যান্ডে আলুতে এক বিশেষ
ধরণের ফাঙ্গাস দেখা দেয় যার কারণে আলুর
উৎপাদনে ব্যাপক ধস নামে। যেহেতু আয়ারল্যান্ডে
আলু প্রধান খাদ্য, ফলে এর রেশ ধরে দেখা দেয়
প্রচণ্ড দুর্ভিক্ষ – যা ইতিহাসে “গ্রেট পটাটো
ফেমিন” নামে পরিচিত। এই সময় আয়ারল্যান্ডের
অর্ধেকেরও বেশী মানুষ (কিছুকিছু এলাকার ৮৫
শতাংশ মানুষ) এ্যামেরিকা, ক্যানাডা এবং
অস্ট্রেলিয়াতে চলে যায়। এই মাইগ্রেশন
এ্যামেরিকার ইতিহাসে খুবই গুরুত্বপূর্ণ কেননা এই
মানুষগুলোই পরবর্তীতে এ্যামেরিকাকে নূতন ভাবে
গড়ে তুলেছিল (রিকোম্যান্ডেড মুভি - গ্যাঙ্স অব
নিউ ইয়র্ক)। এই মাইগ্রেশনের ফলে এ্যামেরিকায়
“রটিক এ্যাকসেন্ট” আরো ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে
পড়ে।
এবার বিংশ শতকের আয়ারল্যান্ডের দিকে
তাকাচ্ছি। এখানে তখন টানটান উত্তেজনা দুটো
শ্রেণীর মধ্যে। একটা দল ক্যাথলিক যারা আইরিশ
জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী। আরেকদল
প্রোটেস্টট্যান্ট যারা নিজেদের এ্যাংলো-আইরিশ
ভাবতে পছন্দ করতো। প্রোটেস্টট্যান্টদের মূল ঘাঁটি
ছিল নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড যেখানে ক্যাথলিকরা
ছিল নির্যাতিত, বঞ্চিত এবং গরীব
(রিক্যোমেন্ডেড মুভি - ফিফটি ডেড মেন
ওয়াকিং)। অন্যদিকে প্রোটেস্টট্যান্টরা ছিল
ক্ষমতাধর এবং তথাকথিত উঁচু বর্গের। তারা গেইলিক
ভাষায় কথা প্রায় বলতোই না। নর্দার্ন
আয়ারল্যান্ড সহ আয়ারল্যান্ড-এর প্রায় সব স্থানেই
ক্যাথলিক স্কুলগুলোতে বাচ্চাদের শেখানো হতো
“হেইচ” কিন্তু প্রোটেস্টট্যান্ট স্কুলগুলোতে
শেখানো হতো “এইচ”। প্রোটেস্টট্যান্টরা প্রচার
করতো “হেইচ” বলে নীচু প্রকৃতির স্বল্প শিক্ষিত
মানুষরা আর “এইচ” বলে এরিস্টোক্রেটরা।
পরবর্তীতে ১৯২২ সনে আয়ারল্যান্ড স্বাধীন হলে
৩২টা কাউন্টির মধ্যে ৬টা নিয়ে তারা নর্দার্ন
আয়ারল্যান্ড হিসেবে পুনরায় ইংল্যান্ডের সাথে
যোগ দেয় এবং বাকি ২৬টা কাউন্টি প্রথমে আইরিশ
ফ্রি স্টেট এবং পরে রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ড
হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
বর্তমানে রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ড-এ স্কুল,
কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় – সব স্থানে “হেইচ” ব্যবহার
করা হয়। এখানে কেউ “এইচ” উচ্চারণ করে না বা
আমরা যদি করি তাহলে তারা ঠিক মত বোঝেও না।
দুটো গল্প বলছি এই প্রসঙ্গে। আমি প্রথম যখন দেশে
টাকা পাঠানোর জন্যে পোস্ট অফিসে যাই, তখন
তারা আমার নামের বানান জিজ্ঞেস করেছিল।
আমি বলেছিলাম, “সি এইচ ও ডব্লিউ…”। যে লোকটা
কাউন্টারে ছিল, সে প্রথমবার বোঝে নি আমি কী
বললাম। ফলে আমি আবার রিপিট করি। কিন্তু
লোকটা এবারও বোঝে না। আমি তৃতীয়বার বলার পর
সে হেসে বললো, “ওহ! হেইচ?”। আরেকটা গল্প
আমাদের ট্রিনিটিরই আরেক বাংলাদেশী ছাত্র
ধ্রুবকে নিয়ে। সে গিয়েছে প্রিন্টার কিনতে।
দোকানে গিয়ে বলেছে, “এইচ পি” দিতে।
সেলসম্যান বোঝে না। বেশ কয়েকবার বলার পর ধ্রুব
যখন “হেইচ পি” বলে তখন সে বুঝেছে। আমার
কাজিনের বন্ধু শিবলী ভাইয়া লন্ডনে থাকেন।
সেখাতে তার একটা অভিজ্ঞতা আছে এ বিষয়ে।
HSBC ব্যাঙ্কে গিয়ে শোনে তারা “হেইচ এস বি
সি” বলে! গতবছর ইংল্যান্ড গিয়ে আমি নিজেও
দেখেছিলাম ওখানেও এখন অনেকেই হেইচ বলে।
আমাদের রিসার্চ রুমে আমরা সব সময় “হেইচ টি এম
এল”, “হেইচ টি টি পি” ইত্যাদি বলি। মাঝে মাঝে
হেইচটা অল্প উচ্চারণ করা হয় যখন সংক্ষেপণের
মাঝে থাকে - যেমন পি.হেইচ.ডি বলা হলে অনেক
সময় “পি.এইচ.ডি”-ও শোনায়। ২০০৭ সন থেকে আমার
মধ্যে এই বিষয়টা এমন ভাবে ছড়িয়েছে যে আমি
চাইলেও এখন আর “এইচ” উচ্চারণ করতে পারি না
কথার মধ্যে। কাল হঠাৎ করে মনে হলো “এইচ পি”
শব্দটা যেন আমি জীবনও শুনি নি, এতটাই অচেনা
লাগছিল। আসলে এটা গ্রহণ করা বা বর্জন করার
বিষয় নয়। এটা পরিবেশে থাকলে আপনাআপনি ঢুকে
যাবে। হয়তো আয়ারল্যান্ড ছেড়ে অন্য দেশে গেলো
আবার আমি “এইচ”-কে স্বাভাবিক ভাবে নিতে
পারবো।
এবার স্ট্যান্ডার্ড-এর বিষয়ে আবার একটু ফিরে
আসি। আমাদের মনে রাখতে হবে ভাষা মানুষের মুখ
থেকে ভাষাবিদের টেবিলে যায়, ভাষাবিদের
টেবিল থেকে মানুষের মুখে আসে না। আজ আমরা
যে বাংলা ভাষায় কথা বলছি এটা কিন্তু নদীয়ার
ডাইলেক্ট। রবি ঠাকুর প্রথম দিকে এর ব্যাপক
বিরোধিতা করেছিলেন। কিন্তু আজ এটাই
স্ট্যান্ডার্ড কারণ সবচেয়ে বেশী মানুষ এই
ডাইলেক্টে কথা বলে। আজ যদি নোয়াখালির
ভাষায় সবাই কথা বলতো তাহলে সেটাই
স্ট্যান্ডার্ড হতো! একেকটা ডাইলেক্ট ধীরেধীরে
স্ট্যান্ডার্ড হয়। আজ এ্যামেরিকান ডাইলেক্টকেও
স্ট্যান্ডার্ড বলা হয়। অথচ প্রায় চার শ বছর আগে
তারাই ছিল “নীচু” এবং
“অশিক্ষিত” (রিকোম্যান্ডেড মুভি - দ্যা
পেট্রিয়ট)। উইকিপিডিয়াতে “হেইচ” আর্টিকেলটা
আমি গত দুই বছর ফলো করছি। ওখানে না না বিতর্ক
হচ্ছে। আর এই বিতর্কের মাধ্যমে যে জিনিসটা
বুঝতে পেরেছি সেটা হলো “হেইচ” এখন ছড়িয়ে
পড়েছে সারা পৃথিবীতে, আর সেজন্যেই এত বিতর্ক।
সেই আর্টিকেলে স্ট্যান্ডার্ড ইংরেজির পক্ষে যে
রেফারেন্সটা দেয়া হয়েছে সেটা অক্সফোর্ড
ডিকশনারি থেকে নেয়া। ফলে সেখানে ব্যাখাটা
কেমন হবে সহজেই বোধগম্য। এই লিঙ্কটা আরেকটা
ডিকশনারি থেকে নেয়া। এখানে “হেইচ” এর
ব্যাখ্যাটা দেখলে অনেক কিছু পরিষ্কার হবে
আমাদের কাছে।
আমার ছোট বোনের স্যার যে “খাঁটি” আইরিশ-এর
সাথে কথা বলেছিলেন, সেই আইরিশ প্রফেসার কি
ক্যাথলিক ছিলেন নাকি প্রোটেস্টট্যান্ট? এটা
একটা প্রশ্ন বটে। আমি ৯৯ শতাংশ নিশ্চিত তিনি
প্রোটেস্টট্যান্ট ছিলেন। আর সেজন্যই তার
ব্যাখ্যাটা অমন ছিল।
সব শেষে একটাই কথা বলবো, আজ যদি কেলটিক
জাতিগুলো অর্থাৎ আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড বা
ওয়েলস -এর কথা বলি, তাহলে “হেইচ”-ই এখানে
স্ট্যান্ডার্ড। “এইচ” এখানে অব্যবহৃত ডাইলেক্ট!

Saturday 12 September 2015

"স্যার সাইফুল আজম" বাইশ জন “Living Eagles”এর একজন ।

সাইফুল আজম ১৯৪১ সালে পাবনা জেলার
খগড়বাড়িয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। উচ্চ মাধ্যমিক
স্তরের পর ১৯৫৬ সালে তিনি পশ্চিম পাকিস্তান
যান। ১৯৬০ সালে তিনি জিডি পাইলট ব্রাঞ্চের
একজন পাইলট হন।
জুন ৬ , ১৯৬৭। আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ চলছে। তৎকালীন
পাকিস্তান এয়ারফোর্স থেকে ডেপুটেশনে আসা
গ্রুপ ক্যাপ্টেন সাইফুল আজম পশ্চিম ইরাকের এক
বিমান ঘাটিতে অবস্থান করছে। অনেকটা
ভোজবাজির মতোই আকাশে চারটা ইজ্রায়েলি
বিমানের ( যাদের কে এস্কোর্ট করছিলো দুইটা
ইস্রায়েলি মিরেজ ফাইটার ) উদয় হয়। আকস্মিক
আক্রমণে ইরাকি এয়ারফোর্স বিপর্জস্ত ।
ইসারায়েলি ক্যাপ্টেন ড্রোর একের পর এক ইরাকি
বিমানের ভবলীলা সাংগ করে চলেছে। তার সাথে
সঙ্গী হিসাবে আছে আরেক ইজ্রায়েলি ক্যাপ্টেন
গোলান। এই অবস্থায় আকাশে উড়াল দেয় সাইফুল
আজম। উড়াল দেবার কিছুক্ষণের মাঝেই তার
উইংম্যান কেও ফেলে দেয় ইজ্রায়েলি ক্যাপ্টেন
ড্রোর। কিন্তু সাইফুল আজম অন্য ধাতুতে গড়া। একে
একে গোলান, ড্রোর সবার প্লেন ফেলে দেয় সে।
মোটামুটি একা লড়াই করে ইজ্রায়েলি বিমান
গুলোকে ইরাকের আকাশ ছাড়তে বাধ্য করে সে।
ক্যাপ্টেন ড্রোর এবং গোলান কে পরে যুদ্ধবন্দী
হিসাবে আটক রাখা হয়।
এখন পর্যন্ত আধুনিক যুদ্ধের ইতিহাসে ইসরায়েলের
সর্বোচ্চ সংখ্যক বিমান ঘায়েল করার রেকর্ড
ক্যাপ্টেন সাইফুল আজমের।
এছাড়া প্রথম বিশবযুদ্ধ থেকে শুরু করে এপর্যন্ত
সর্বোচ্চ সংখ্যক শত্রুপক্ষের বিমান ঘায়েল করার
রেকর্ড এর তালিকায় ও তিনি উপরের দিকে আছেন।
আরব-ইস্রায়েল যুদ্ধে অসাধারণ অবদান রাখার
স্বীকৃতি স্বরূপ জর্দান-ইরাক-পাকিস্তান তাকে
বীরত্ব সূচক পদকে ভূষিত করে। তিনটি দেশের
সম্মান সূচক সামরিক পদক অর্জনের ঘটনা সামরিক
ইতিহাসে বিরল। একই সাথে তিনটি দেশের হয়ে
যুদ্ধ করা এবং একই ব্যাক্তির দ্বারা একের অধিক
শ্ত্রু রাষ্ট্রের (ভারত এবং ইসরায়েল) বিমান
ভূপাতিত করার বিরল রেকর্ডের অধিকারীও এই একই
ব্যাক্তি।
১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় তাকে সাময়িক
ভাবে সারাগোধাতে অবস্থিত ১৭
স্কোয়াড্রন এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ফ্লাইট
লেফটেন্যান্ট সাইফুল আযম এ সময় এফ-৮৬ স্যাবর
জেট বিমান এর পাইলট হিসেবে প্রধানত পদাতিক
সহায়ক মিশন পরিচালনা করতেন। ১৯৬৫ সালের ১৯ এ সেপ্টেম্বর বিখ্যাত চাবিন্দা ট্যাংক যুদ্ধে অংশ
নেন তিনি এবং বিমান থেকে রকেট ও গোলা বর্ষন
করে একাধিক ভারতিয় ট্যাংককে ধ্বংস ও অকার্যকর
করেন। এসময় চারটি ভারতিয় ”Gnat”জঙ্গি বিমান
তাদের উপর আক্রমন করে। সাধারন ভাবে বিমান
থেকে ভুমিতে যুদ্ধের উপযোগি অস্ত্র সজ্জিত
থাকায় এসময় পাকিস্তানি বিমানগুলির পালিয়ে
যাওয়াই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু ফ্লাইট
লেফটেনান্ট সাইফুল আযম রুখে দাড়ান এবং বিমান
যুদ্ধ বা ডগ ফাইটে একটি ভারতিয় ”Gnat” জঙ্গি
বিমান ভুপাতিত করেন। এই কৃতিত্বের জন্য তাকে
পাকিস্তানে ”সিতারা-ইজুরায়ত” (বাংলাদেশের
বীরবিক্রম এর সমতুল্য, পাকিস্তানের তৃতীয়
সামরিক বীরত্বের খেতাব) পদকে ভুষিত করা হয়।
১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ
চলাকালীন সময়ে তিনি চারটি F-86 Sabre এর
ফরমেশনে অংশ নিয়ে ভারতের ভূমীতে আক্রমণের
উদ্দেশ্যে উড্ডয়ন করেন। হঠাৎ দুইটি ভারতীয়
Folland Gnat (Folland Gnat, F-86 এর চেয়ে Superior) তাদের পথ রোধ করে। ঘটনার জেরে সৃষ্ট ডগফাইটে সাইফুল আজম একটি Folland Gnat গোলাবর্ষণ করে ভূপাতিত করেন (পাইলট,ফ্লাইং
অফিসার ভি মায়াদেব নিরাপদে Ejectকরে
বেরিয়ে আসলে তাকে যুদ্ধবন্দি করা হয়). অন্য
Folland Gnat টি রনেভঙ্গ দিয়েছে বুঝতে পারার
পর সেটিকে পালিয়ে যেতে দেওয়া হয়।
১৯৬৬ সালের নভেম্বর মাসে তৎকালীন ফ্লাইট
লেফটেন্যান্ট সাইফুল আজম এবং অপর আরেক জন
পাকিস্তানী বিমান বাহিনীর অফিসার ফ্লাইট
লেফটেন্যান্ট সারওয়ার সাদকে রাজকীয় জর্ডান
বিমান বাহিনীতে প্রেষণে প্রেরণ করা হয়।
সেখানে তারা রাজকীয় জর্ডান বিমান বাহিনীর
Hawker Hunter অপারেট করতেন। তারা সেখানে
১৯৬৭ সালের আরব-ইসরাইল যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন।
৫জুন ১৯৬৭ সালে আল মাফরাক থেকে উড্ডয়নের পর
ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট সাইফুল আজম একটি Mystere
IV কে তার দ্বিতীয়শিকারে পরিণত করেন। এই
ঘটনার মাত্র দুই দিন পর, ৭ জুন ১৯৬৭ ইরাকী বিমান
বাহিনীতে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে পশ্চিম ইরাকী
এয়ার ফিল্ড H-3 এ তিনি অবস্থান করাকালে,
ইসরাইলী জঙ্গি জেট এয়ার ফিল্ড H-3 আক্রমণ
করে। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট
সাইফুল আজম ইরাকী Hawker Hunter বিমান নিয়ে
উড্ডয়ন করে একটি Mirage III এবং একটি Vautour
Bomber ভূপাতিত করেন (Vautour Bomber টির
ছোট্ট কিছু ভগ্নাবশেষ সাইফুল আজমের Hunter এ
গেঁথে থাকতে দেখা যায়, যা থেকে তার
সহকর্মীরা বুঝতে পারেন তিনি বিমানটিকে
আকাশেই গুড়িয়ে দিয়েছেন)। উল্লেখ্য Mirage III
সাইফুল আজমের Hawker Hunter এর তুলনায় বহুগুণে
Superior। এছাড়া Mystere IV ও এয়ার টু এয়ার
কমব্যাটের ক্ষেত্রে Hawker Hunter এর চেয়ে
Superior। Mirage III, Mystere IV সাইফুল আজমের
Skill, Tactics ও সাহসের কাছে পরাস্ত হয়েছে।
কিন্তু সাইফুল আযম ও তার স্কোয়াড্রন সাফল্য লাভ
করলেও অন্যান্য জর্দানি বিমানগুলি ব্যার্থ হয়
এবং ইসরাইলি বোমা বর্ষনে বেশিরভাগ জর্দানি
বিমান ভুমিতেই ধ্বংস হয়ে যায় ও রানওয়েগুলি
ক্ষতি গ্রস্ত হয়। সাইফুল আযম তার সাফল্যের জন্য
জর্দানিদের প্রসংশা ও শ্রদ্ধা পান। বাদশাহ
হুসাইন তার নিজের গাড়িতে করে সাইফুল আযমকে
তার মেস এরৎ পেীছিয়ে দেন। জর্দান থেকে আর
উড্ড্য়ন সম্ভব না হওয়ায় জর্দানি বিমান বাহিনীর
পাইলটরা প্রতিবেশি ইরাকি বিমান বাহিনীতে
সহায়তার সিদ্ধান্ত নেয়।
সাইফুল আযম আবারও পাকিস্তানে ফিরে যাওয়ার
পরিবর্তে ইরাকি বিমান বাহিনীর হয়ে ইসরাইলের
বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন। এবারও দক্ষতার
পরিচয় দিয়ে ইরাকি বিমান বাহিনীর হকার
হান্টার বিমান নিয়ে তিনি তৎকালিন সর্বাধুনিক
ফ্রান্সের "মিরেজ-৩সি" বিমান
ভুপাতিত করেন। তিনি একটি ”ভেটর”বোমারু
বিমানও ভুপাতিত করেন। তার অসাধারণ কৌশল ও
সাহসিকতায় মুগ্ধ হয়ে জর্দান সরকার ”ওয়াসমা ই
ইস্তেকলাল” বা স্বাধিনতা পদক এবং ইরাক কর্তক
”নওয়াত-ই সুজ্জাত” পদকে ভুষিত করে। জর্ডান ও
ইরাক উভয় দেশই তাকে বীর পদক প্রদান করে।
১৯৭১ সালে বাঙ্গালী হওয়ায় তাকে পাকিস্তান
বিমান বাহিনী Grounded করে। পূর্ব পাকিস্তান
স্বাধীন হয়ে বাংলাদেশের জন্ম হলে তিনি নতুন
গঠিত বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর Director of
Flight Safety এবং পরবর্তীতে Director of
Operation হিসেবে নিয়োগ পান।
১৯৭৭ সালে তিনি উইং কমান্ডার পদে পদোন্নতি
পান এবং ঢাকা বিমান বাহিনী ঘাটির বেস
কমান্ডার হন। ১৯৮০ সালে সাইফুল আজম
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী থেকে গ্রুপ ক্যাপ্টেন
পদে অবসর গ্রহণ করেন। অবসর গ্রহণ করার পর তিনি
দুই টার্মে বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের
পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি
Film Development Corporation এর ব্যবস্থাপনা
পরিচালকও ছিলেন।
তিনি ১৯৯১-৯৬ সালে পাবনা-৩ আসন থেকে
(চাটমোহর উপজেলা, ফরিদপুর
উপজেলা ও ভাঙ্গুরা উপজেলা) বাংলাদেশ
জাতীয়তাবাদী দলের (BNP) পক্ষে পঞ্চম জাতীয়
সংসদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি
বর্তমানে নাতাশা ট্রেডিং এজেন্সি, লিঃ (এয়ার
ক্রাফট ও অন্যান্য যন্ত্রপাতির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান)
এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি একটি ট্রাভেল
এজেন্সিও পরিচালনা করেন। স্ত্রী নাতাশা, তিন
সন্তানের জনক তিনি।
২০০১ সালে তাকে যুক্তরাষ্ট্র বিমান বাহিনী
বিশেষ সম্মাননা প্রদান করে। তিনি বাইশ জন
“Living Eagles”এর একজন ।

Friday 11 September 2015

চলুন দেশটাকে পরিস্কার করি (সিলেট অভিযান)

# স্থান ও তারিখঃসিলেট ১২সেপ্টেম্বের
# নিবন্ধন : https://docs.google.com/forms/d/1hwq1Nw-rpJl1UJalCqdx3uJFfhfZIflTK1qRdjEX0j4/viewform
***(অংশগ্রহণকারী সকলকে টি-শার্ট সহ পরিচ্ছন্নতা সংশ্লিষ্ট
অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি বিতরণ করা হবে)
আমরা কে না চাই আমার ঘরটা পরিষ্কার থাক, আমার বাসাটা
পরিষ্কার থাক, আমার এলাকাটা পরিষ্কার থাক, আমার দেশটা
পরিষ্কার থাক? আমরা সবাই চাই একটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন
পরিবেশে বাঁচতে । কিন্তু শহরায়ন এবং নগরায়নের যুগে এসে
আমরা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা থেকে দূরে সরে যাচ্ছি । ক্ষতিটা
আমাদেরই । আমরা নিজেদের দেশকে সুজলা সুফলা শস্যশামলা
বলে গর্ব করলেও, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দিক দিয়ে আমাদের
অবস্থান অনেক পিছিয়ে ।
শুধু প্রশাসনের দোষ দিয়ে আর কতদিন, আসুন না আমরাই উদ্যোগ
নেই, আসুন না আমরাই একটি সামজিক আন্দোলন গড়ে তুলি-
দেশটাকে পরিষ্কার করার । মনে রাখবেন একটি পরিচ্ছন্ন দেশ
একটি পরিচ্ছন্ন জাতিস্বত্বার পরিচায়ক ।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ‘ পরিবর্তন চাই ’ নামক একটি সামাজিক
স্বেচ্ছাসেবামূলক সংগঠন দেশটাকে পরিষ্কার করার আন্দোলনে
নেমেছে । এই সংগঠনের লক্ষ্য এক এক করে পুরো বাংলাদেশে
পরিচ্ছন্নতার এই আন্দোলন ছড়িয়ে দেয়া । এরই ধারাবাহিকতায়
‘পরিবর্তন চাই’ আসছে আপনাদের-আমাদের সিলেটে। আপনি
চাইলেই এই প্রচেষ্টার গর্বিত অংশ হতে পারেন ।
দেশটাকে পরিষ্কার করি - সিলেট অভিযানের নিবন্ধন ফর্মের
লিংক : https://docs.google.com/forms/d/1hwq1Nw-rpJl1UJalCqdx3uJFfhfZIflTK1qRdjEX0j4/viewform

"পরিবর্তন চাই"- এর উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমগুলো সম্পর্কে
জানতে-
http://goo.gl/NdZpBp
নিবন্ধন সীমিত, তাই দ্রুত নিবন্ধন করে আপনার অবস্থান
নিশ্চিত করুন । আশা করি নিজ দায়িত্ববোধ থেকেই সবাই এই
অভিযানে অংশ নেবেন। সিলেটের সকল শ্রেণীর মানুষের
স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ কামনা করছি ।

সাবধান হোন মটর সাইকেল দুর্ঘটনার হাত থেকে

একটি দুর্ঘটনা হতে পারে সারাজীবনের কান্না
বন্ধুরা মিলে বাইকে চড়ে বিকেলে
বেড়িয়েছিল। রাস্তা ফাঁকা পেয়ে হঠাৎ
তিনজনের মাথায় রেসের ভুত চাপে। প্রিয়
বন্ধুকে পিছনে ফেলতেই আচমকা রডবাহী
একটি গাড়ি তার সামনে। ব্রেক কষে ছিল
ঠিকই কিন্তু ততক্ষণে রড গুলো তার পেটে
ঢুকে গেছে।
বাংলাদেশের পাড়া মহল্লাতেও প্রায়
এধরনের দৃশ্য দেখা যায়। যারা মটরসাইকেল
নিয়ে স্কুল কলেজের অলিতে গলিতে,
সিনেমার হিরো সেজে রকেট গতিতে ছুটে
চলে। সে সব ছেলেদের যদি একটু বোধ
জাগ্রত হয় তাহলেই এই পোস্টের সার্থকতা।
(পাকিস্তানের এক বন্ধু তার শহরে ঘটে
যাওয়া খবরটা শেয়ার করেছেন)

Tuesday 8 September 2015

একনজরে দেখে নিন নতুন কি কি থাকছে এন্ড্রয়েড মার্শম্যালোতে

মিষ্টির দিকে গুগলের ঝোঁক একটু বেশিই দেখা যায়। আর সেই ধারাবাহিকতায় অ্যান্ড্রয়েডের পরবর্তী সংস্করণটির নামও গুগল একটি মিষ্টিজাতীয় খাবারের নামে দিয়েছে
। সিএনএনের খবরে জানা গেল, অ্যান্ড্রয়েডের পরবর্তী সংস্করণটির নাম দেওয়া হচ্ছে ‘মার্শম্যালো’।

গুগলের জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম অ্যান্ড্রয়েডের নতুন সংস্করণ ‘মার্শম্যালো’র ডেভেলপার সংস্করণ উন্মোচিত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছিল, অ্যান্ড্রয়েড ৫.০ [ললিপপ] সংস্করণের পর ৫.২ সংস্করণ অবমুক্ত হতে পারে। কিন্তু অ্যান্ড্রয়েড প্রিয়দের রীতিমতো অবাক করে নতুন সংস্করণ ৬.০ অবমুক্ত করতে যাচ্ছে গুগল। নতুন এই সংস্করণে যুক্ত হয়েছে আগের জনপ্রিয় সব ফিচারের পাশাপাশি নতুন আকর্ষণীয় ফিচার। আর এই সংস্করণটির নতুন ১০ টি আকর্ষনীয় ফিচার নিয়েই লিখছি আমার আজকের টিউন।
এক নজরে দেখা যাক ‘মার্শম্যালোর’ নতুন ১০ টি আকর্ষনীয় ফিচার কি কি ?
1. গুগল নাউ অন ট্যাপ
2. ক্রোম কাস্টম ট্যাবস
3. দীর্ঘক্ষণ চার্জ সংরক্ষণে বিশেষ ব্যবস্থা
4. স্মার্ট ফিঙ্গার প্রিন্ট সমর্থন
5. ইউএসবি টাইপ ‘সি’ সমর্থিত দ্রুত চার্জিং ব্যবস্থা
6. অ্যাপ পার্মিশন সিস্টেম
7. অ্যান্ড্রয়েড পে
8. ডিরেক্ট শেয়ার
9. নতুন বুট অ্যানিমেশন
10. অ্যাপ ড্রয়ার সম্পাদনা
গুগল নাউ অন ট্যাপঃ নতুন সংস্করণের অ্যান্ড্রয়েড মার্শম্যালো অপারেটিং সিস্টেমে যুক্ত হওয়া অন্যতম ফিচার ‘গুগল নাউ অন ট্যাপ’। যার ফলে গুগলের সেবাসমূহ এখন থেকে ব্যবহারকারী আরও সহজে পাবেন। ফিচারটির সাহায্যে ব্যবহারকারী এখন থেকে অনলাইন কিংবা স্মার্টফোনে দ্রুততম সময়ে অ্যাপের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় তথ্য সার্চ করতে পারবেন। এজন্য স্মার্টফোন স্ক্রিনের যেকোন ফাঁকা স্থানে স্পর্শ করে ধরে রাখতে হবে। তাহলেই পাওয়া যাবে সংশ্লিষ্ট ফিচারটি। যেখানে লিখে কিংবা ভয়েস কমান্ড দিয়ে সার্চ করা যাবে।
ক্রোম কাস্টম ট্যাবস : অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে অনেক সময় কোনো লিঙ্কে ক্লিক করলে তা ফোন ব্রাউজারের ডিফল্ট অ্যাপে নিয়ে যায় কিংবা একটি উইজার্ডে ব্রাউজিং অ্যাপ উন্মোচিত হয়। যেখানে সিলেক্ট করতে হবে। এই ফিচারের পরিবর্তে অ্যান্ড্রয়েড মার্শম্যালো ওএসএ ব্যবহারকারী অ্যাপের জন্য পৃথক ক্রোম কাস্টম ট্যাব। যেখানে নতুন কোনো অ্যাপ ওপেনের ঝামেলা ছাড়াই পৃথক লিঙ্ক পাওয়া যাবে। যা ফোনের গতিকে অক্ষুণ্ন রাখতে বিশেষ কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলেই মনে করছেন গুগল অপারেটিং সিস্টেম বিভাগের নির্মাতারা।
দীর্ঘক্ষণ চার্জ সংরক্ষণে বিশেষ ব্যবস্থা : অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম চালিত স্মার্টফোনে চার্জ স্বল্পতা অনেক বড় সমস্যা। তাই স্মার্টফোনে এমন চার্জ সমস্যা সমাধানে অ্যান্ড্রয়েড ওএসে বিশেষ ব্যবস্থা যুক্ত করেছে নির্মাতা গুগল। যেখানে স্মার্টফোনের ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ্লিকেশন এবং একই সঙ্গে স্মার্টফোনে একাধিক অ্যাপ চালু রাখাসহ চার্জ বেশি ব্যয় করে এমন বিভিন্ন ত্রুটি নিয়ে কাজ করছে গুগল। এই ব্যবস্থা আগের সংস্করণের চেয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে ব্যাটারির চার্জ ব্যবস্থা পরিমাপে সক্ষম হবে।
স্মার্ট ফিঙ্গার প্রিন্ট সমর্থন : ইতিমধ্যে অনেক স্মার্টফোন নির্মাতই নিজস্ব ডিভাইসে ‘ফিঙ্গার প্রিন্ট বা ফিঙ্গার লক’ ব্যবস্থা যুক্ত করেছে। তবে ফিঙ্গার প্রিন্ট ব্যবস্থাকে আরও নিরাপদ এবং ব্যবহারবান্ধব করতে গুগল তাদের নতুন এই সংস্করণে যুক্ত করেছে স্মার্ট ফিঙ্গার প্রিন্ট ফিচার। এতে করে অ্যান্ড্রয়েড ওএস চালিত স্মার্টফোনে ফিঙ্গার প্রিন্ট স্ক্যানারের সাহায্যে অর্থ লেনদেন করা যাবে। এছাড়া ফোনের লক ব্যবস্থাতেও নতুন সিকিউরিটি নিয়ে আসবে এই ফিচারটি।
ইউএসবি টাইপ ‘সি’ সমর্থিত দ্রুত চার্জিং ব্যবস্থা : স্মার্টফোনের চার্জ দীর্ঘক্ষণ সংরক্ষণের পাশাপাশি যাতে ফোনের ব্যাটারি কর্মক্ষম এবং ভালো থাকে। বিষয়টিতে নজর দিয়ে ফোনে ডাটা ট্রান্সফার রেট বৃদ্ধিতেও গুরুত্বারোপ করেছে গুগল। এজন্য অ্যান্ড্রয়েড মার্শম্যালোতে দ্রুত স্মার্টফোন চার্জিংয়ে যুক্ত হয়েছে ‘ইউএসবি সি’ ব্যবস্থা। যার ফলে আগের মাইক্রোইউএসবি পোর্ট ব্যবস্থার চেয়ে তিন থেকে পাঁচ গুণ বেশি গতিতে চার্জ হবে স্মার্টফোন। যা সহজে স্মার্টফোন চার্জিংয়ে সহায়ক হবে। এর পাশাপাশি ডাটা কেবলের মাধ্যমে ফোনে তথ্য আদান-প্রদান হবে আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে দ্রুত।
অ্যাপ পার্মিশন সিস্টেম : গুগলের অবমুক্ত যে কোনো সময়ের অপারেটিং সিস্টেমের তুলনায় মার্শম্যালো অধিক নিরাপদ হতে যাচ্ছে। এজন্য নতুনভাবে অ্যাপ পার্মিশন ব্যবস্থা নিয়ে আসছে সার্চ জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানটি। কোনো অ্যাপ ডিভাইসে ইনস্টল করতে গেলে অ্যাপটি ফোনের কী তথ্য গ্রহণ করবে, সে সম্পর্কে ব্যবহারকারীকে বিস্তারিত জানানো হবে। এই অ্যাপ পার্মিশন ব্যবস্থাকে পৃথক আটটি বিভাগে ভাগ করা হবে। যা অ্যাপ ব্যবস্থাকে ব্যবহারকারীর জন্য আরও নিরাপদ করবে।
অ্যান্ড্রয়েড পে : অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম ললিপপের চেয়ে নতুন অনেক ফিচারে সাজবে অ্যান্ড্রয়েড মার্শম্যালো। আর এ অপারেটিং সিস্টেমে যুক্ত হবে স্মার্টফোনে অর্থ লেনদেনে গুগলের নির্মিত অ্যাপ ব্যবস্থা ‘অ্যান্ড্রয়েড পে’। যা সর্বনিম্ন অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে ৪.৪ [কিটক্যাট] এ পরবর্তী সময়ে ব্যবহার করা যাবে। তবে অ্যাপটি প্রথমবারের মতো যুক্ত করা হয়েছে অ্যান্ড্রয়েড ৬.০ মার্শম্যালো সংস্করণে।
ডিরেক্ট শেয়ার : অ্যান্ড্রয়েড মার্শম্যালো অপারেটিং সিস্টেমে এক ক্লিকে খুব সহজেই সোস্যাল মাধ্যমে ফোনে সংরক্ষিত ফাইল যেমন, ছবি কিংবা মিউজিক ফাইল বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করা যাবে। এতে করে ব্যবহারকারীর পৃথক সামাজিক সাইটে লগইনের প্রয়োজন হবে না।
নতুন বুট অ্যানিমেশন : অ্যান্ড্রয়েডের নতুন অপারেটিং সিস্টেমের সঙ্গে এবার পরিবর্তন এসেছে ফোন বন্ধ কিংবা ওপেন করার সময় প্রদর্শিত বুট অ্যানিমেশনে। যেখানে চারটি রঙিন বৃত্তাকার চিহ্নবিশেষ অ্যান্ড্রয়েড লোগোতে রূপ নেওয়ার আগ পর্যন্ত বিভিন্নভাবে পরিবর্তিত হয়।
অ্যাপ ড্রয়ার সম্পাদনা : নতুন অপারেটিং সিস্টেমকে ব্যবহারকারীর জন্য আরও সহজ এবং ব্যবহারবান্ধব করতে নির্মাতা গুগল যুক্ত করেছে অ্যাপ সম্পাদনার ফিচার ‘অ্যাপ ড্রয়ার কাস্টমাইজেবল টগেল’। যেখানে ব্যবহারকারী হাতের স্পর্শে প্রয়োজনীয় অ্যাপগুলো পৃথক ক্যাটাগরিতে সাজিয়ে রাখতে পারবেন। যাতে দরকারি মুহূর্তে বিভিন্ন অপশন না চেপে বরং সহজেই হাতের কাছে পাওয়া যাবে অ্যাপ।

পোস্টটি প্রথম প্রকাশিত হয় এখানে সতোজ্ঞান।

Thursday 3 September 2015

অনার্স ২য় বর্ষ পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০১৩ সালের অনার্স ২য় বর্ষ
পরীক্ষার ফলাফল গত ০১/৯/২০১৫ তারিখ প্রকাশিত হয়েছে।
প্রকাশিত ফলাফলের ব্যাপারে কোনো পরীক্ষার্থীর আপত্তি
থাকলে ফল প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে উত্তরপত্র পুন: নিরীক্ষণের
আবেদন করা যাবে।

আবেদনের পদ্ধতিঃকলেজের অধ্যক্ষের মাধ্যমে পরীক্ষানিয়ন্ত্রক
বরাবর সাদা কাগজে আবেদনকরতে হবে।
আবেদন পত্রের সাথে যা যা জমা দিতে হবেঃ সঙ্গে
রেজিস্ট্রেশন কার্ড, প্রবেশপত্র, ফলাফলের প্রিন্ট কপি
(ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া) এবং প্রতি পত্রের জন্য ৮০০ টাকা
হারে ব্যাংক ড্রাফট সংশ্লিষ্ট বিভাগে জমা দিতে হবে।

আবেদনের শেষ সময়ঃ আগামী ৩১/৯/১৫ তারিখের মধ্যে আবেদন
করতে হবে।