Monday, 16 February 2015

এ কোন 'আইএস ভূত' বাংলাদেশের ঘাড়ে


যৌনদাসী ইস্যুতে ‘আইএস ভূত’ বাংলাদেশের ঘাড়ে

ঢালাও যৌন নির্যাতনের মুখে ইন্দোনেশিয়া ফিলিপাইন শ্রীলংকা বিগত বছরগুলোতে সউদি আরবে নারী গৃহকর্মী প্রেরণ বন্ধ করে দেয়ার পর সংকট নিরসনে নতুন ৪টি দেশ ইথিওপিয়া, কেনিয়া, নেপাল ও বাংলাদেশ থেকে ‘হাউজ মেইড’ নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সৌদি শ্রম মন্ত্রনালয়। নারীদের অধিকার রক্ষায় উক্ত ৪টি দেশে ‘জনসচেতনতা’ কম থাকার পাশাপাশি সরকারী-বেসরকারী পর্যায়ে ‘উদাসীনতা’র সুযোগ কাজে লাগিয়েই মূলতঃ নিজ দেশের গৃহকর্মী সংকট দূর করার উদ্যোগ নেয় সৌদিরা। বাংলাদেশ অবশ্য ‘অন্য কারণে’ আগে থেকেই সৌদি শ্রম মন্ত্রনালয়ের ব্ল্যাকলিস্টে থাকায় সম্প্রতি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পরপরই শুরু হয়েছে সেই সংকট নিরসনেরই তোড়জোড়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, কেনিয়ান ও ইথিওপিয়ানদের গায়ের রং ছাড়াও অভ্যাস-আচরণগত অনেক বিষয়াদি বিশেষ শ্রেনীর সৌদি পুরুষদের মনঃপুত না হবার কারণে এবং নেপালীরা তুলনামূলকভাবে বেশি চালাক- চতুর হওয়ায় গৃহস্থালীর কাজের হাজার হাজার শূন্যস্থান পূরণে এক্ষেত্রে ‘নো আদার অপশান’ হিসেবে বেছে নেয়া হয় বাংলাদেশকে। অথচ গৃহকর্মী (হাউজ মেইড) হিসেবে নিয়োগ দেয়ার পর তাদেরকে নিজ নিজ বাসা- বাড়িতে নিয়ে গিয়ে যৌনদাসী তথা ‘সেক্স- স্লেভস’ বানিয়ে থাকে অধিকাংশ সৌদি মালিকরা – বিভিন্ন দেশের সংবাদ মাধ্যমে এমন খবর ফলাও করে বহুবার প্রকাশিত ও প্রচারিত হলেও কানে পানি যায়নি বাংলাদেশ সরকারের। বাংলাদেশে রাজনৈতিক নেতৃত্বের তরফ থেকে একসময় ঘরে ঘরে কাজ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও পরিকল্পনা ও আন্তরিকতার অভাবে ভেস্তে যায় সবকিছুই। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর অসহযোগিতার পাশাপাশি ‘জ্বালাও- পোড়াও’ মার্কা আন্দোলন সেই সাথে সরকারের অসহিষ্ণু মনোভাব এবং রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ‘গনতন্ত্রের কবর’ রচিত হওয়ায় লাইমলাইটের বাইরে চলে যায় বিদেশে নতুন শ্রমবাজার সন্ধানের অতীব গুরুত্ববহ বিষয়টি। দেশের ইতিহাসের সবচাইতে ‘রং হেডেড’ শ্রমমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের অনুর্বর মস্তিষ্কপ্রসূত পলিসি জি-টু-জি’র ভুল প্রয়োগে দেশে দেশে ধ্বংস হয়ে যায় বাংলাদেশের শ্রমবাজার। মন্ত্রীর আনাড়িপনাতেই মুখ থুবড়ে পড়ে জনশক্তি রফতানী। ভয়াবহ এই ব্যর্থতা ঢাকতেই মূলতঃ বাংলাদেশে সরকার সৌদি আরবের অন্ধকার জগতের সব তথ্য চেপে গিয়ে দেশটিতে নারী গৃহকর্মী প্রেরণে রাজি হয়ে যায়। আগে নারীদের ‘সাপ্লাই’ করা হলে পরে অন্য পেশায় পুরুষদের নিয়োগের বিষয়টি বিবেচনা করবে সৌদিরা – এমন নেক্কারজনক কন্ডিশনকেই মাথা পেতে নেয় বাংলাদেশ। বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘হাউজ মেইড’ মোড়কে নিজ দেশের নারীদের নিশ্চিত যৌনদাসত্বের পাইপলাইনে তুলে দিয়ে বাংলাদেশ এক অর্থে জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর পদাংকই অনুরণ করতে যাচ্ছে। ইরাকের ইয়াজিদী সম্প্রদায়ের হাজার হাজার নারীকে যেভাবে যৌনদাসী করেছে আইএস জঙ্গীরা, ভদ্রতার মুখোশধারী সৌদি পুরুষদের ঠিক সেই ‘কামলীলা’র সব খবর রেখেও বাংলাদেশ সরকার তার দেশের নারীদের আজ একই অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছে। প্রসঙ্গত, ইরাক-সিরিয়াতে আইএস নিয়ন্ত্রিত জনপদে রয়েছে যৌনদাসীদের একাধিক বিশাল বিশাল বাজার, যেখানে বিক্রি করার জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে ধরে আনা হয় নারীদের। কথিত যুদ্ধে লিপ্ত দেশ-বিদেশের যোদ্ধারা প্রতিনিয়ত এসে থাকে যৌনদাসীদের উক্ত বাজারগুলোতে এবং নগদ অর্থে যার যার পছন্দ মোতাবেক নারীদের কিনে নিয়ে যায়। যৌনদাসী দিয়ে যৌনক্ষুধা মেটানো আইএস জঙ্গীরা যেমন ‘নিজস্ব শরীয়ত’ মোতাবেক ‘হালাল’ মনে করে থাকে, ঠিক একইভাবে সৌদি নিয়োগদাতা মালিকরাও বিভিন্ন দেশের নারী গৃহকর্মীদের ইচ্ছেমতো ভোগ করাকে ‘অবৈধ’ মনে করে না। দাস-দাসীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনকে অধিকাংশ সৌদিরা সেই আইএস স্টাইলেই ‘হালাল’ মেনে থাকে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে বাংলাদেশের নারীরাও দলে দলে আসবে এখন মরু প্রান্তরে এবং ক্ষুধার্ত সৌদি পুরুষরা নির্ধারিত অফিস থেকে যার যার চাহিদা মোতাবেক তাদের ঘরে নিয়ে যাবে। নামে ‘হাউজ মেইড’ কাজে যৌন দাস-দাসী, বিভিন্ন দেশের এমন নারী গৃহকর্মীদের সৌদিরা অস্বাভাবিক অনিয়ন্ত্রিত বিকৃত সব যৌনাচারে বাধ্য করার পাশাপাশি উঠতে বসতে মারধর সহ ভয়ানক সব টর্চার করে থাকে - এসব তথ্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে থাকলেও দেশটিতে সেই ‘সো কল্ড’ হাউজ মেইড প্রেরণের সিদ্ধান্ত এখনো স্থগিত না করায় ইতিমধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সৌদি প্রবাসী বাংলাদেশীরা। তাঁরা বলছেন, পেট্রোল বোমার ‘ভূত’ নামের আগেই দেশ ও জাতির ঘাড়ে এভাবে ‘আইএস ভূত’ চেপে বসবে, এটা কোনভাবেই আজ কাম্য নয়। সৌদি প্রবাসীদের প্রশ্ন, এজন্যই কি বাংলার মা- বোনেরা বীরাঙ্গনা হয়েছিল একাত্তরে ?

No comments:

Post a Comment

Monday, 16 February 2015

এ কোন 'আইএস ভূত' বাংলাদেশের ঘাড়ে


যৌনদাসী ইস্যুতে ‘আইএস ভূত’ বাংলাদেশের ঘাড়ে

ঢালাও যৌন নির্যাতনের মুখে ইন্দোনেশিয়া ফিলিপাইন শ্রীলংকা বিগত বছরগুলোতে সউদি আরবে নারী গৃহকর্মী প্রেরণ বন্ধ করে দেয়ার পর সংকট নিরসনে নতুন ৪টি দেশ ইথিওপিয়া, কেনিয়া, নেপাল ও বাংলাদেশ থেকে ‘হাউজ মেইড’ নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সৌদি শ্রম মন্ত্রনালয়। নারীদের অধিকার রক্ষায় উক্ত ৪টি দেশে ‘জনসচেতনতা’ কম থাকার পাশাপাশি সরকারী-বেসরকারী পর্যায়ে ‘উদাসীনতা’র সুযোগ কাজে লাগিয়েই মূলতঃ নিজ দেশের গৃহকর্মী সংকট দূর করার উদ্যোগ নেয় সৌদিরা। বাংলাদেশ অবশ্য ‘অন্য কারণে’ আগে থেকেই সৌদি শ্রম মন্ত্রনালয়ের ব্ল্যাকলিস্টে থাকায় সম্প্রতি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পরপরই শুরু হয়েছে সেই সংকট নিরসনেরই তোড়জোড়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, কেনিয়ান ও ইথিওপিয়ানদের গায়ের রং ছাড়াও অভ্যাস-আচরণগত অনেক বিষয়াদি বিশেষ শ্রেনীর সৌদি পুরুষদের মনঃপুত না হবার কারণে এবং নেপালীরা তুলনামূলকভাবে বেশি চালাক- চতুর হওয়ায় গৃহস্থালীর কাজের হাজার হাজার শূন্যস্থান পূরণে এক্ষেত্রে ‘নো আদার অপশান’ হিসেবে বেছে নেয়া হয় বাংলাদেশকে। অথচ গৃহকর্মী (হাউজ মেইড) হিসেবে নিয়োগ দেয়ার পর তাদেরকে নিজ নিজ বাসা- বাড়িতে নিয়ে গিয়ে যৌনদাসী তথা ‘সেক্স- স্লেভস’ বানিয়ে থাকে অধিকাংশ সৌদি মালিকরা – বিভিন্ন দেশের সংবাদ মাধ্যমে এমন খবর ফলাও করে বহুবার প্রকাশিত ও প্রচারিত হলেও কানে পানি যায়নি বাংলাদেশ সরকারের। বাংলাদেশে রাজনৈতিক নেতৃত্বের তরফ থেকে একসময় ঘরে ঘরে কাজ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও পরিকল্পনা ও আন্তরিকতার অভাবে ভেস্তে যায় সবকিছুই। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর অসহযোগিতার পাশাপাশি ‘জ্বালাও- পোড়াও’ মার্কা আন্দোলন সেই সাথে সরকারের অসহিষ্ণু মনোভাব এবং রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ‘গনতন্ত্রের কবর’ রচিত হওয়ায় লাইমলাইটের বাইরে চলে যায় বিদেশে নতুন শ্রমবাজার সন্ধানের অতীব গুরুত্ববহ বিষয়টি। দেশের ইতিহাসের সবচাইতে ‘রং হেডেড’ শ্রমমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের অনুর্বর মস্তিষ্কপ্রসূত পলিসি জি-টু-জি’র ভুল প্রয়োগে দেশে দেশে ধ্বংস হয়ে যায় বাংলাদেশের শ্রমবাজার। মন্ত্রীর আনাড়িপনাতেই মুখ থুবড়ে পড়ে জনশক্তি রফতানী। ভয়াবহ এই ব্যর্থতা ঢাকতেই মূলতঃ বাংলাদেশে সরকার সৌদি আরবের অন্ধকার জগতের সব তথ্য চেপে গিয়ে দেশটিতে নারী গৃহকর্মী প্রেরণে রাজি হয়ে যায়। আগে নারীদের ‘সাপ্লাই’ করা হলে পরে অন্য পেশায় পুরুষদের নিয়োগের বিষয়টি বিবেচনা করবে সৌদিরা – এমন নেক্কারজনক কন্ডিশনকেই মাথা পেতে নেয় বাংলাদেশ। বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘হাউজ মেইড’ মোড়কে নিজ দেশের নারীদের নিশ্চিত যৌনদাসত্বের পাইপলাইনে তুলে দিয়ে বাংলাদেশ এক অর্থে জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর পদাংকই অনুরণ করতে যাচ্ছে। ইরাকের ইয়াজিদী সম্প্রদায়ের হাজার হাজার নারীকে যেভাবে যৌনদাসী করেছে আইএস জঙ্গীরা, ভদ্রতার মুখোশধারী সৌদি পুরুষদের ঠিক সেই ‘কামলীলা’র সব খবর রেখেও বাংলাদেশ সরকার তার দেশের নারীদের আজ একই অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছে। প্রসঙ্গত, ইরাক-সিরিয়াতে আইএস নিয়ন্ত্রিত জনপদে রয়েছে যৌনদাসীদের একাধিক বিশাল বিশাল বাজার, যেখানে বিক্রি করার জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে ধরে আনা হয় নারীদের। কথিত যুদ্ধে লিপ্ত দেশ-বিদেশের যোদ্ধারা প্রতিনিয়ত এসে থাকে যৌনদাসীদের উক্ত বাজারগুলোতে এবং নগদ অর্থে যার যার পছন্দ মোতাবেক নারীদের কিনে নিয়ে যায়। যৌনদাসী দিয়ে যৌনক্ষুধা মেটানো আইএস জঙ্গীরা যেমন ‘নিজস্ব শরীয়ত’ মোতাবেক ‘হালাল’ মনে করে থাকে, ঠিক একইভাবে সৌদি নিয়োগদাতা মালিকরাও বিভিন্ন দেশের নারী গৃহকর্মীদের ইচ্ছেমতো ভোগ করাকে ‘অবৈধ’ মনে করে না। দাস-দাসীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনকে অধিকাংশ সৌদিরা সেই আইএস স্টাইলেই ‘হালাল’ মেনে থাকে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে বাংলাদেশের নারীরাও দলে দলে আসবে এখন মরু প্রান্তরে এবং ক্ষুধার্ত সৌদি পুরুষরা নির্ধারিত অফিস থেকে যার যার চাহিদা মোতাবেক তাদের ঘরে নিয়ে যাবে। নামে ‘হাউজ মেইড’ কাজে যৌন দাস-দাসী, বিভিন্ন দেশের এমন নারী গৃহকর্মীদের সৌদিরা অস্বাভাবিক অনিয়ন্ত্রিত বিকৃত সব যৌনাচারে বাধ্য করার পাশাপাশি উঠতে বসতে মারধর সহ ভয়ানক সব টর্চার করে থাকে - এসব তথ্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে থাকলেও দেশটিতে সেই ‘সো কল্ড’ হাউজ মেইড প্রেরণের সিদ্ধান্ত এখনো স্থগিত না করায় ইতিমধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সৌদি প্রবাসী বাংলাদেশীরা। তাঁরা বলছেন, পেট্রোল বোমার ‘ভূত’ নামের আগেই দেশ ও জাতির ঘাড়ে এভাবে ‘আইএস ভূত’ চেপে বসবে, এটা কোনভাবেই আজ কাম্য নয়। সৌদি প্রবাসীদের প্রশ্ন, এজন্যই কি বাংলার মা- বোনেরা বীরাঙ্গনা হয়েছিল একাত্তরে ?

No comments:

Post a Comment